বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শীবা চাড্ডা, যিনি বধাই দো ও ডক্টর জি–এর মতো সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পরিচিত, ১৯৯৮ সাল থেকে চলচ্চিত্র জগতে কাজ করছেন। তার প্রথম ছবি ছিল শাহরুখ খান ও মনীষা কৈরালার দিল সে। এরপর তিনি শাহরুখের সঙ্গে ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি, রইস এবং জিরো ছবিতেও অভিনয় করেছেন। তবে অভিনয়ে আসার আগেই তার সঙ্গে শাহরুখের এক পুরোনো যোগসূত্র ছিল। দুজনেই দিল্লির হ্যান্স রাজ কলেজের ছাত্র ছিলেন। শাহরুখ তার সিনিয়র ছিলেন আট বছরের বড়। তবুও শীবা রইস (২০১৭) ও জিরো (২০১৮) তে কিং খানের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
সিদ্ধার্থ কান্নানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শীবা স্মৃতিচারণা করে বলেন, “দিল সে তে আমার প্রায় কোনো ভূমিকাই ছিল না। এতটাই ছোট যে আমি ভুলেই গেছি আসলে কী ছিল সেই চরিত্র। তবে দার্জিলিংয়ে গিয়ে শুটিং করার সুযোগ হয়েছিল, আর শাহরুখকে কাছ থেকে দেখেছিলাম। মনীষা কৈরালা তখন সেটে ছিলেন না। একদিন তুষারের মধ্যে তাদের দুজনের হাঁটার একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য ধারণ করার কথা ছিল, কিন্তু মনীষা অনুপস্থিত ছিলেন। তখন পরিচালক মণি রত্নম নিজে এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি কি মনীষার পোশাক পরে তার বডি ডাবল হয়ে সেই শট দিতে রাজি আছি কি না।”
যদিও দিল সে তে তার চরিত্র ছিল চোখের পলকে হারিয়ে যাওয়ার মতো ছোট, পরে রইস ও জিরো তে তিনি শাহরুখের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। শীবা বলেন, “শাহরুখ আমার কলেজের সিনিয়র, কিন্তু আমি রইস এর শুটিংয়ে গিয়ে সেটা মনে করিয়ে দিইনি। তখন শাহরুখ দিল্লিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘এই ছবিতে এমন একজন অভিনেত্রী আছেন যিনি আমার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন, তাকে অবশ্যই খেয়াল করবেন—তিনি অসাধারণ।’ অথচ ছবিতে আমাদের একসঙ্গেও কোনো দৃশ্য ছিল না। তিনি একেবারেই ভিন্ন ধরনের মানুষ।”
শাহরুখের ভদ্রতার উদাহরণ টেনে শীবা বলেন, “একবার একটি দৃশ্যে আমার তাকে জড়িয়ে ধরতে হয়েছিল। গল্পে তিনি মার খাচ্ছিলেন আর আমি তাকে বাঁচাচ্ছিলাম। শুটিংয়ের আগে তিনি আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমি কি আপনাকে ছুঁতে পারি?’ আমি হেসে বললাম, ‘হ্যাঁ, ঠিক আছে, চলুন।’ তিনি সত্যিই খুব সুন্দর মনের মানুষ। সেটে যাওয়ার আগেই তিনি আমার নাম জেনে রেখেছিলেন। আর এই অনুভূতিটা একেবারেই আলাদা।”
এ সাক্ষাৎকারে শীবা আরও বলেন, টেলিভিশন ও সিনেমায় বারবার তাকে মায়ের চরিত্রেই কাস্ট করা হয়। “অনেক সময় দেখি, আমি এমন ছেলের মা হচ্ছি যার বয়স আমার থেকে মাত্র ১০-১২ বছরের কম। টিভিতে তো ৩০ বছরের নায়িকাকেও বড় ছেলের মা বানিয়ে দেয়। প্রথমে এটা দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। পরে ভাবলাম, এটা শুধু কাজ, করে ফেলো, এগিয়ে যাও। বেশি বিরোধিতা করলে কাজই পাওয়া যাবে না।”
ইউটি/টিএ