রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইফুল ইসলাম রিপন (২২) হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামাল পত্তনদার ওরফে কুদ্দুস রহিম শেখকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে ভারতের মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
শনিবার (৯ আগস্ট) টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (সিআইইউ) জামাল পত্তনদার ওরফে কুদ্দুস রহিম শেখকে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের কামাঠিপুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
জামাল পত্তনদার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফেলু মোল্লাপাড়ার হোসেন পত্তনদারের ছেলে।
মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজবাড়ী আদালত জামাল পত্তনদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও তিনি সাজা এড়াতে পালিয়ে ভারতে চলে আসেন এবং তখন থেকেই পলাতক ছিলেন।
জানা গেছে, জামাল পত্তনদার ২০২৩ সাল থেকে ভারতে বসবাস করছিলেন এবং মিথ্যা ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে জাল কাগজপত্র ব্যবহার করছিলেন। তার কাছ থেকে একটি আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার একটি পাসবুক, আধার আপডেটের স্বীকৃতিপত্র এবং বাংলা ভাষায় লেখা আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার একটি ফটোকপি জব্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত থেকে আমাদের কোনো বার্তা পাঠানো হয়নি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ও দৌলতদিয়া বাজার ব্যবসায়ী পরিষদের সাবেক সভাপতি মোহন মণ্ডলের ছেলে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র সাইফুল ইসলাম রিপনের মাথায় ও বুকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বন্ধু ফরিদ শেখও গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় রিপনের মামা খলিল মণ্ডল বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান আসামি জামাল পত্তনদারকে হত্যায় ব্যবহৃত সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ বোরের পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পরে পুলিশ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ মোছা. জাকিয়া পারভীন রিপন হত্যা মামলায় জামাল পত্তনদারকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেন। এ সময় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১২ আসামিকে খালাস দেয়া হয়। তবে জামিনে বের হয়ে পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামাল পত্তনদার আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
কেএন/এসএন