এনসিপির ঘরে সুবাতাস বইছে : মোস্তফা ফিরোজ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈঠকের পর রাজনীতির বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। 

মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘এনসিপি কিছুটা নিচের দিকে ডাউন টেন্ড ছিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর দলটিতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে।’

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘এনসিপিকে ঘিরে অনেক ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামের সেই চাঁদা দাবির ঘটনা তো আছেই। কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে পাঁচ নেতাকে শোকজ করে দলটি। এসব আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আজকে এনসিপির ঘরে একটা সুখবর বা সুবাতাস বইছে। সেটা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠক।

জানি না এই বৈঠকের আসল উদ্দেশ্য কী? হয়তো সব কথা প্রকাশ হবে না। কেন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যাক্টিভ? যেটা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নীতির সঙ্গে মেলে না। মানে বাইডেন প্রশাসন কেন গণতন্ত্র নির্বাচন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছে?’

তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কো রুবিও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন যে তার দপ্তরের বাইরে কোনো দেশের রাষ্ট্রদূতরা সেই দেশের নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো মন্তব্য না করেন। ভালো নাকি মন্তব্য—এ রকম যেন মতামত না দেয়। সেখানে কিন্তু ব্যতিক্রম যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্তরা দূত ট্রেসি অ্যান্ড জ্যাকবসন। এই ভদ্র মহিলা কিন্তু লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজকে এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করলেন।

তারপরে তারা সম্ভবত ইতিমধ্যে জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই যে বৈঠকগুলির মধ্য দিয়ে একটা এনসিপি যেই কিছুটা নিচের দিকে ডাউন টেন্ড ছিল, অর্থাৎ বাজারদরটা যে নিম্নমুখী ছিল, সেটা কিন্তু আবার একটু ঊর্ধ্মুখী হলো। অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দিচ্ছে।’ 

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এনসিপির ব্যাপারে বলা হলো। ইউনূসের ব্যাপারে বলা হয় যে এটা হলো তাদের চাইল্ড। ড. ইউনূস এবং এনসিপির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা ভূমিকা রয়েছে। যেটা ছাত্রদের মধ্য দিয়ে সঞ্চালিত হয়েছে। এটা তারা বলে, আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। কিন্তু আজকে গুরুত্ব দেওয়াতে এটা মনে হলো যে তাদের বোধ হয় একটা লক্ষ্য আছে। আগামী দিনে কারা ক্ষমতায় আসবে। কিভাবে আসা উচিত, কী করবে?’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো বোঝার চেষ্টা করছে যে বাংলাদেশে কি পশ্চিমাদের ভাষায় তাদের কয়েকটা উদ্বেগ থাকে যে বাংলাদেশে যেন ধর্মান্ধতা বৃদ্ধি না পায়। যেন উগ্রতা বৃদ্ধি না পায়। সংখ্যালঘুদের ওপর যেন অত্যাচার না হয়। এই ধরনের একটি পরিস্থিতির দিকে যাবে কি না? নারীনীতি কী হবে, শ্রমনীতি কী হবে? অনেকগুলো বিষয় তারা ক্যালকুলেশন করে সেসব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক করে। সব জায়গায় ঘাটতি থাকলে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জেনে নেয়। নিজেদের মতামতটা তারা বলার চেষ্টা করে যাতে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কথাগুলো একটু বোঝার চেষ্টা করে বা সেটা ফলো করে। এখন সে তেমনই কি না, এটা তো আর বিস্তারিতভাবে বলা যাবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘বৈঠকে তাদের বেশ ভালো একটা ছবি দেখা যাচ্ছে। জয়েন্ট সেখানে বহুল আলোচিত নেতারাও আছেন—যাদের শোকজ করা হয়েছিল। সেই তাসনিম জারাও আছেন। তারপরে সদস্যসচিব আখতার, আহ্বায়ক নাহিদ আছেন। তাসনিম জারা খুবই পপুলার পশ্চিমাদের কাছে, তার একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে তার পড়াশোনা দেশের বাইরে থাকার কারণে হতে পারে। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রদূতের অফিশিয়াল বাসভবনে এই বৈঠক হয় দলের সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন এক বার্তা বিষয়টি জানিয়েছেন। বৈঠকে এনসিবির পক্ষ থেকে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডাক্তার তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন। 

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘এখন এই বৈঠকের পর বোঝা যাবে তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কী কথা হলো? কী জানতে চাইল বা কী তারা বলল—তার বিস্তারিত অবশ্যই জানা দরকার। এই বৈঠকগুলো যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত লন্ডন পর্যন্ত গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এনসিপির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন এর মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে। এর মধ্যে একটা রাজনৈতিক কার্যকরণ আছে। বাংলাদেশে যেহেতু একটা ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। তারা সব বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ কোন দিকে ধাবিত হবে—সেটাই হয়তো গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।’

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাজবাড়ীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্রেপ্তার Aug 13, 2025
img
বলিউডের ইতিহাসে রেকর্ড গড়া হৃতিক-সুজানের ব্যয়বহুল বিচ্ছেদ Aug 13, 2025
img
বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে নরেন্দ্র মোদি বরাবর চিঠি Aug 13, 2025
img
বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি Aug 13, 2025
img
সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনের দায় দেখছে দুদক Aug 13, 2025
img
ব্যাটসম্যানকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখিয়ে শাস্তি পেলেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার Aug 13, 2025
img
‘টেস্টে দ্বি-স্তর থেকে বের হতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০০ বছর লাগবে’ Aug 13, 2025
img
ভুল বুঝে, ভুল পরিচালনায় মানুষকে ভোগান্তি দিয়ে কিছু করবেন না : স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক Aug 13, 2025
img
গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা গ্রেপ্তার Aug 13, 2025
img
জুলাই ঘোষণাপত্রের আলোকেই ইলেকশন চাই, সিলেকশন নয় : তাহের Aug 13, 2025
img
বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায় Aug 13, 2025
img
ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পরমাণু যুদ্ধের হুমকি,মুখ খুলল যুক্তরাষ্ট্র Aug 13, 2025
img
মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা Aug 13, 2025
img
‘চীনের দুঃখ হোয়াংহো নদী, এনসিপির দুঃখ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী’ Aug 13, 2025
img
জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে জামায়াতের সমাবেশ শুরু Aug 13, 2025
img
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাতিল হবে কি না, রায় ২ সেপ্টেম্বর Aug 13, 2025
img
দেশে-বিদেশে নির্বাচনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন : আমীর খসরু Aug 13, 2025
img
বাগদান ভাঙার পর কীভাবে নিজেকে সামলাচ্ছেন নুসরাত ফারিয়া? Aug 13, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন : ইসলামী আন্দোলন Aug 13, 2025
img
মেহেরপুর সীমান্তে ৪ জনকে পুশ ইন করল বিএসএফ Aug 13, 2025