পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহে বাংলা সিনেমার মর্যাদা ও বাজার পুনরুদ্ধারে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার নন্দনে টলিউডের প্রযোজক, পরিচালক ও পরিবেশকদের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ঠিক এক সপ্তাহ পর সরকারি বিবৃতিতে সিলমোহর পড়ল সেই প্রস্তাবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যের প্রতিটি সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্সে বছরের ৩৬৫ দিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রাইম টাইমে অন্তত একটি বাংলা সিনেমা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের উদ্দেশে কড়া নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলা চলচ্চিত্রের প্রসার, ব্যবসা ও দর্শকসংখ্যা বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। দীর্ঘদিন ধরে হিন্দি ও দক্ষিণী মেগাবাজেট সিনেমার চাপে কোণঠাসা হচ্ছিল বাংলা ছবি। অনেক ভালো মানের বাংলা ছবি প্রাইম টাইমে স্লট না পেয়ে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। একদিকে সিঙ্গল স্ক্রিন হলগুলোকে মুম্বই প্রযোজকদের শর্ত মানতে হচ্ছিল, অন্যদিকে মাল্টিপ্লেক্সগুলো ব্যবসার স্বার্থে বাংলা ছবির শো সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছিল।
টলিউডের অভ্যন্তরে এই সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া। অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পদক্ষেপ বাংলা ছবিকে নতুনভাবে প্রাণ ফিরিয়ে দেবে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য অভিনয় জগতে আসা কুণাল ঘোষ বলেছেন, “বছরে ৩৬৫ দিন বিকেল তিনটা থেকে রাত নটার মধ্যে প্রতিটি স্ক্রিনে অন্তত একটি বাংলা ছবির প্রদর্শন করতেই হবে। বাংলা ছবির প্রচার ও প্রসারে সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্বাগত।”
তবে প্রশ্ন থেকেই যায় এই উদ্যোগ কি বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার সঙ্গে ব্যবসায়িক টক্কর দিতে পারবে? কুণাল ঘোষের মতে, “বলিউডের সব সিনেমাই সফল হয় না, অনেক দুর্বল ছবিও জায়গা পায়। ভালো বাংলা ছবিগুলিও প্রাপ্য স্লট পেলে দর্শক টানতে পারবে।”
বাংলা সিনেমা প্রেমীদের আশা, এই সিদ্ধান্ত বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকে আবারও উজ্জ্বল সময় ফিরিয়ে দেবে।
এমকে/টিএ