যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি ছিল ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ভুল’ এবং এটি অপ্রয়োজনীয়ভাবে ভারতকে ক্ষুব্ধ করেছে।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন নয়াদিল্লির ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যার মধ্যে রুশ তেল কেনার জন্য ২৫ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্কও রয়েছে। বোল্টনের মতে, এই পদক্ষেপ ‘উল্টো ফল বয়ে আনা’ এবং দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।
ট্রাম্প নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ভারত রাশিয়ার যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে সহায়তা করছে। তার দাবি, ‘ভারত বিপুল পরিমাণ রুশ তেল কিনছে এবং এর বড় অংশ বিশ্ববাজারে বিক্রি করে বিপুল মুনাফা করছে। তারা পাত্তা দিচ্ছে না ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্র কত মানুষ হত্যা করছে।’
যদিও চীনও রুশ তেল কিনছে, বোল্টন বলেন, বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে এমন শুল্ক বা দ্বিতীয় ধাপের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। তার মতে, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় ট্রাম্পের হাতে ভুগেছে একমাত্র ভারত।’
এপ্রিল মাসে চীনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত শুল্কযুদ্ধে জড়ালেও, যেখানে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প, পরে তিনি বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বাড়াননি। বরং ভারতই তার সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক আঘাতের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে।
এর আগে বুধবার ট্রাম্প আসন্ন আলাস্কা বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সমালোচনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তার দাবি, ‘রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে আমি যদি মস্কো আর লেনিনগ্রাদ বিনামূল্যে পেতাম, তাহলেও মিডিয়া সমালোচনা করত।’ তিনি সাবেক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি প্রচার করা মিডিয়াকেও আক্রমণ করেন এবং জন বোল্টনকে ‘বোকার মতো’ বলে অভিহিত করেন। বোল্টন এর আগে বৈঠকটিকে ‘পুতিনের বড় জয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোল্টন বলেন, ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সময় লাগবে। তার ভাষায়, ‘হোয়াইট হাউস গত ৩০ দিনে ভারতের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, সেই ভুল থেকে আস্থা পুনরুদ্ধার করতে অনেক সময় লাগবে।’
পাকিস্তান প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্পকে বিদ্রূপ করে বোল্টন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকার ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির ট্রাম্পকে সামলানোর আরও ভালো কৌশল বের করছেন। ‘আমার একটাই প্রস্তাব- মোদির উচিত ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য দুইবার মনোনয়ন দেওয়া।’
গত জুনে ইসলামাবাদ ঘোষণা দেয়, ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেবে তারা। পাকিস্তানের দাবি, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ‘সিদ্ধান্তমূলক কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ’ করেছেন ট্রাম্প। এই ঘোষণা পাকিস্তান সরকারের সরকারি এক্স (আগে টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত হয়।
সূত্র: এনডিটিভি।