নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা মোড়ে সিএনজি স্টেশন দখল, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের গাড়িতে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষে দুইজন গুলিবদ্ধ হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাঁচদোনা মোড় এলাকায় চলে এই সংঘর্ষ। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, পাঁচদোনা এলাকার তাইজুদ্দিনের ছেলে হামিদ মিয়া (২৮) ও বিল্লাল মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (২৮)। তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে তারা কে কোন গ্রুপের তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর এ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একই ইউনিয়নের শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক আলম মিয়া (৫৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তার, ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি এবং পাঁচদোনা মোড়ের সিএনজি স্টেশন দখল নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে বিরোধ শুরু হয় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি লালু মিয়া ও বিএনপিকর্মী মোসাদ্দেক হোসেনের মধ্যে। এরপর থেকে কয়েক দফা সংঘর্ষ, হামলা ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাঁচদোনা মোড়ে ফুটপাতের রাস্তা ও সিএনজি স্টেশন দখলকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে এবং দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের লোকজন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে এই সংঘর্ষ।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাসান মিয়া (২৮) বলেন, উভয় গ্রুপের সংঘর্ষের মূল কারণ আধিপত্য বিস্তার।
সাবেক ইউপি সদস্য লাল মিয়া মূলত বিএনপি নেতা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর মোসাদ্দেক হয়ে ওঠে হাইব্রিড বিএনপি নেতা। সংঘর্ষে আহত আরো চারজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে।
নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, সন্ধ্যায় সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। আমরা উভয় গ্রুপের মাঝে অবস্থান করছিলাম। পুলিশের গাড়িতে হামলার বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।
তিনি আরো বলেন, সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ হচ্ছে আধিপত্য বিস্তার, এলাকা দখল ও নিয়ন্ত্রণ। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছি।
বিএনপিকর্মী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, গত ২ দিন আমার তিনজন লোককে লালু মিয়ার লোকজন পিটিয়ে আহত করেছে। আমি কিছু বলি নাই। গতকাল সন্ধ্যায় ৭টায় একজন কর্মীকে একা পেয়ে মারধর করে। আমরা ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে লালু মিয়ার লোকজন পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায়।
তিনি আরো বলেন, পাকিজা কারখানা থেকে আমরা ঝুট কিনেছি এবং অগ্রিম ১৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু লালু মিয়া ও তার লোকজন আমাদের বাধা দেয় ও হামলা চালায়। আমার দুইজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
পাঁচদোনা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি লালু মিয়াকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
টিকে/