কণ্ঠশিল্পী ও সাবেক এমপি মমতাজ বেগমের পর এবার আদালতে এসে ভিড়ের চাপে জুতা হারালেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি। সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক তাকে যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিকেল ২টা ২৫ মিনিটে আফ্রিদিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আনা হয়। এরপর হাজতখানা থেকে শুনানির জন্য যখন তাকে এজলাসে তোলা হয়, তখন আদালত চত্বরে সাংবাদিক, আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের ব্যাপক ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় তিনি নিজের জুতা হারান। শুনানি শেষে খালি পায়ে তাকে আবার হাজতখানায় নেওয়া হয়।
শুনানিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, সিআইডির পরিদর্শক খান মো. এরফান, আফ্রিদির বিরুদ্ধে আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডে উসকানি ও অর্থদানের অভিযোগে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তিনি দাবি করেন, আফ্রিদি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোকে "হত্যা করতে" উসকানি দিয়েছেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ পেতে রিমান্ড প্রয়োজন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়রুল ইসলাম শুনানিতে বলেন, আফ্রিদি করোনা আক্রান্ত ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন, তার স্ত্রী গর্ভবতী এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বাদী নিজেই এফিডেভিট দিয়ে জানিয়েছেন যে তথ্যগত ভুলে আফ্রিদির নাম মামলায় এসেছে। তাই জামিন মঞ্জুরের জন্য আদালতের কাছে মানবিক আবেদন করা হয়।
সব পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আফ্রিদিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
এজলাসে নেওয়ার সময় ভিড় ঠেলে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে আফ্রিদিকে বারবার হোঁচট খেতে দেখা যায়। পরে খুঁড়িয়ে হাঁটতে থাকেন তিনি। পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে তিনি এজলাসে পৌঁছান। এ সময় আদালতের ভেতরেও হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
হাজতখানায় ফেরার পথে দেখা যায়, আফ্রিদির পায়ে জুতা নেই। প্রচণ্ড ভিড়ে তিনি জুতা হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানা গেছে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল গত ১৩ মে, যখন এই মামলায় গ্রেপ্তার মমতাজ বেগমও আদালতে জুতা হারান। পরে সেটি আদালত পাড়ার এক মানসিক প্রতিবন্ধীর পায়ে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, আফ্রিদিকে ২৪ আগস্ট বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এর আগে ১৭ আগস্ট তার বাবা, মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিহত হন মো. আসাদুল হক বাবু। ওই ঘটনায় বাবুর বাবা জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। সেখানে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর ও তার বাবা ২২ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।
এফপি/ টিএ