দেশে প্রথমবারের মতো ৩টি অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩-এর ধারা ১৭ ও ১৯-এর আলোকে বিস্তারিত জরিপ ও অনুসন্ধান শেষে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম হাইড্রোলজিক্যাল অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার তিনটি অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
এ অঞ্চলে মোট ২৫টি উপজেলার ২১৫টি ইউনিয়ন (৪ হাজার ৯১১টি মৌজা)-এর মধ্যে ৪৭টি ইউনিয়নকে (১ হাজার ৫০৩টি মৌজা) অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) তথ্য অধিদপ্তরের এক বিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিবরণীতে বলা হয়, ২৫ আগস্ট ঢাকার গ্রিন রোডের ওয়ারপো ভবনের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় পানিসম্পদ পরিষদের নির্বাহী কমিটির ১৮তম সভায় এই তিনটি এলাকাকে সংকটাপন্ন ঘোষণা করা হয়।
বিবরণী থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন (১০৪টি মৌজা) ও একটি পৌরসভা (আটটি মৌজা)-এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন (সাতটি মৌজা) এবং একটি পৌরসভাকে (পাঁচটি মৌজা) অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পানি আইন অনুযায়ী এসব এলাকায় পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পাশাপাশি খাবার পানি, গৃহস্থালি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে করণীয় চূড়ান্ত করবে।
সভায় পানির প্রাপ্যতা যাচাই করতে নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা চালানোর সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে ৫০ জেলায় ভূগর্ভস্থ পানির প্রাপ্যতা যাচাইয়ে যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে তা বাকি আরো ১৪টি জেলাতে শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া সভায় আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর ও হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩-এর ধারা ২২ ও ২৭-এর ক্ষমতাবলে প্রথমবারের মতো ‘হাওর প্রতিবেশ সুরক্ষা আদেশ’ জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই সুরক্ষা আদেশের অধীনে হাওর দুটিতে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন খাতে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ সময় পানি আইন, ২০১৩-এর দুর্বল কার্যকারিতার ওপর আলোকপাত করে আইনটির প্রয়োজনীয় সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা ছাড়া শিল্প খাতে পানি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ‘পানি ব্যবস্থাপনা নীতি ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
নির্বাহী কমিটির সভাপতি পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা এবং অন্যান্য দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এমআর/এসএন