গাজায় মানবিক সহায়তা মিশনের অর্ধেকই বাধাগ্রস্ত করেছে ইসরায়েল : জাতিসংঘ

গত সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় পরিচালিত প্রায় অর্ধেক মানবিক সহায়তা মিশন ইসরায়েলের বাধা, বিলম্ব বা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তরের (ওসিএইচএ) তথ্য উদ্ধৃত করে সংস্থার মুখপাত্র স্টেফান দ্যুজারিক বৃহস্পতিবার বলেন, “গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহ কার্যক্রমে বিলম্ব ও প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত রয়েছে। এমনকি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া মিশনগুলোও সম্পন্ন করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “ত্রাণকর্মীদের প্রায়ই বিপজ্জনক, যানজটপূর্ণ কিংবা অচল সড়কে আটকে থাকতে হয়।”

দ্যুজারিক জানান, গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত গাজায় মানবিক কার্যক্রমের জন্য করা ৮৯টি সমন্বয় প্রচেষ্টার মধ্যে মাত্র ৫৯ শতাংশ সফল হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ মিশন প্রাথমিক অনুমোদন পেলেও মাঠ পর্যায়ে বাধাগ্রস্ত হয়, ৮ শতাংশ সরাসরি বাতিল করা হয় এবং ৭ শতাংশ মিশন আয়োজনকারীদেরই প্রত্যাহার করতে হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোট ২৩টি মিশন মাঠে বাধার মুখে পড়ে। এর মধ্যে পাঁচটি শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হলেও বাকি ১৮টি বাতিল হয়ে যায়। এসব মিশনের মধ্যে সীমান্ত ক্রসিং থেকে ত্রাণ সংগ্রহ এবং রোগী সরিয়ে নেওয়ার কাজও ছিল।

গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্যুজারিক সতর্ক করেন, “গাজার আরও এলাকায় পূর্ণমাত্রার ইসরায়েলি সামরিক অভিযান শুরু হলে তা শুধু গাজা সিটির বাসিন্দাদের জন্য নয়, পুরো গাজা উপত্যকার জন্যই ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে আনবে।”

জাতিসংঘের জনসংখ্যা পর্যবেক্ষণ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ও মঙ্গলবার উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণে পালিয়েছে প্রায় ১,৩০০ মানুষ। গত ১৪ আগস্ট ইসরায়েল নতুন হামলার পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকে উত্তর থেকে দক্ষিণে পালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ হাজারে। এ পর্যন্ত গাজা সিটি থেকে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বাস্তুচ্যুতি রেকর্ড করা হয়েছে।

দ্যুজারিক বলেন, “গাজা উপত্যকাজুড়ে এখনো লাখ লাখ মানুষ অতিরিক্ত ভিড়, অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে আশ্রয়কেন্দ্রে দিন কাটাচ্ছে।”
সূত্র: আনাদোলু

পিএ/এসএন


Share this news on:

সর্বশেষ

img
আমরা এখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট করিনি : নুর Nov 07, 2025
img
ফটিকছড়ি আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ Nov 07, 2025
img
পরবর্তী আইপিএলও খেলবেন ধোনি Nov 07, 2025
ছেলের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য | ইসলামিক জ্ঞান Nov 07, 2025
ভিকি-ক্যাটরিনা ইনস্টাগ্রামে ঘোষণা করলেন সুখব Nov 07, 2025
img
প্রয়াত ম্যারাডোনাকে ঘিরে নতুন রহস্য উন্মোচিত! Nov 07, 2025
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে জামায়াত Nov 07, 2025
'ভারতকে খুশি করার জন্য সরকার জাকির নায়েককে দেশে আসতে দেয়নি' Nov 07, 2025
বিএনপি বাংলাদেশের একমাত্র শক্তিশালী দল: ফখরুল Nov 07, 2025
img
হাসিনার আমলে বিএনপিকে ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছে: খায়রুল কবির খোকন Nov 07, 2025
বিএনপির মনোনয়ন না পেলেও মানুষের ভালোবাসায় ভাসছেন মাহবুবুর রহমান | Nov 07, 2025
img
নির্বাচন নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে : নায়াব ইউসুফ Nov 07, 2025
img
নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা হলে জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করা হবে: বকুল Nov 07, 2025
img
বেলজিয়ামের ভিসা আবেদন সম্পর্কিত নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে দূতাবাস Nov 07, 2025
img
৭৫-এর পরেই রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ের সূচনা হয়: আসিফ মাহমুদ Nov 07, 2025
img
দেশের বাস্তবতায় নির্বাচন করতে ১০-২০ কোটি টাকা লাগে : আসিফ মাহমুদ Nov 07, 2025
img
প্রসূন আজাদ, আমি দুঃখিত- অভিনেত্রীর পোস্টের জবাবে পরীমণি Nov 07, 2025
img
যারা জামানত হারাবে তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে: খোকন Nov 07, 2025
img
সমালোচনার ঝড়ে দেশ ছাড়লেন পাকিস্তানি টিকটকার সামিয়া Nov 07, 2025
img
ঢাকা ক্যাপিটালসে সরাসরি চুক্তিতে সাইফ হাসান Nov 07, 2025