সংগীত ইতিহাসে আজকের দিন

ব্যক্তিগত আবেগ থেকে বিশ্বজয়ের গল্প, বিটলসের সাফল্যের প্রতীক ‘হে জুড’

লন্ডন, ৩০ আগস্ট ১৯৬৮। বিশ্ব সংগীতের ইতিহাসে এক অনন্য মুহূর্ত। এদিন ব্রিটিশ ব্যান্ড দ্য বিটলস প্রকাশ করল তাদের বহুল আলোচিত সিঙ্গেল ‘হে জুড’। বিশেষত্ব হলো, এই গানটির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করল ব্যান্ডটির নতুন প্রতিষ্ঠিত লেবেল অ্যাপল রেকর্ডস। সংগীত জগতে নতুন দিগন্তের সূচনা করে প্রকাশের পরপরই গানটি ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তে। শ্রোতাদের হৃদয়ে ঝড় তোলে এর সুর ও কথার মেলবন্ধন।

গানটির স্রষ্টা পল ম্যাকার্টনি। তিনি এটি লিখেছিলেন জন লেননের ছেলে জুলিয়ান লেননকে সান্ত্বনা দিতে, যখন জন ও তার স্ত্রী সিনথিয়ার বিবাহ বিচ্ছেদের কঠিন সময় পার হচ্ছিল। প্রথমে গানের নাম ছিল ‘হে জুলস’, পরে পল সেটি পরিবর্তন করে রাখেন ‘হে জুড’। সুর ও কথার এই আবেগময় যাত্রা তখনই আলাদা হয়ে ওঠে বিটলসের ভক্তদের কাছে।

প্রকাশের মুহূর্ত থেকেই গানটি নতুন ইতিহাস তৈরি করে। যুক্তরাজ্যের সিঙ্গেল চার্টে এটি উঠে আসে শীর্ষ স্থানে। যুক্তরাষ্ট্রের বিলবোর্ড হট ১০০ তালিকায় টানা নয় সপ্তাহ ধরে রাজত্ব করে। বিশ্বের পনেরটিরও বেশি দেশে গানটি দখল করে চার্টের শীর্ষস্থান। রেকর্ড বিক্রির সংখ্যাটিও অবিশ্বাস্য—আট মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল সেই সময়ে।

গানটির দৈর্ঘ্যও ছিল একেবারে ব্যতিক্রম। প্রায় সাত মিনিট এগারো সেকেন্ড দীর্ঘ এই গানটি তখনকার সময়ের জন্য অস্বাভাবিকভাবে দীর্ঘ বলে বিবেচিত হয়েছিল। শেষের প্রায় চার মিনিট জুড়ে বিস্তৃত “না-না-না” কোরাস অংশটি শ্রোতাদের মধ্যে এক অনন্য আবেশ তৈরি করে। বিটলসের প্রযোজক জর্জ মার্টিনের তত্ত্বাবধানে গানটি রেকর্ড করা হয়েছিল লন্ডনের বিখ্যাত ট্রাইডেন্ট স্টুডিওতে।

‘হে জুড’ শুধু একটি গান নয়, এটি এক যুগের প্রতীক। ষাটের দশকের শেষ দিকে যখন সংগীত বিশ্ব এক নতুন ধারার সন্ধান করছিল, তখন বিটলসের এই সৃষ্টি মানুষের আবেগ, সম্পর্ক ও ভালোবাসার গল্পকে সুরে বেঁধে অনন্ত সময়ের জন্য অমর করে রেখেছে। সংগীতপ্রেমীদের কাছে এটি আজও সমান প্রাসঙ্গিক এবং বিশ্ব সংগীতের ইতিহাসে এটি অন্যতম সেরা সৃষ্টি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জঙ্গলীয় কায়দায় চলছে ইসি: নাসীরুদ্দীন Oct 19, 2025
img
নির্বাচনী দায়িত্বে পেশাদারিত্ব পালনের আহ্বান সিইসির Oct 19, 2025
img

শাহজালাল বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড

ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কমিটি গঠন Oct 19, 2025
img
এমন কোনো শক্তি নেই যা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে : জয়নুল আবদিন ফারুক Oct 19, 2025
img
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না : সেলিম Oct 19, 2025
img
৫০ বছরের প্রথা ভাঙল সৌদি, ‘কফিল’-থেকে মুক্তি পাচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিকরা! Oct 19, 2025
img
৫ শতাংশ আবাসন ভাতায় উপকৃত হবেন ৮৯ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী Oct 19, 2025
img
লন্ডনে ১৬তম বইমেলায় গাইবেন সাবিনা ইয়াসমিন Oct 19, 2025
img
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে গণফোরাম : আলী রিয়াজ Oct 19, 2025
img
নিরাপদ-দখলমুক্ত সড়কের দাবিতে রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Oct 19, 2025
img
জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে আমার বক্তব্যের আংশিক প্রচার হয়েছে : সালাহউদ্দিন Oct 19, 2025
img
হ্যাট্রিকের পাশাপাশি গোল্ডেন বুট জিতলেন মেসি Oct 19, 2025
img
শ্রমিকদের কর্মবিরতির ডাকে অচল চট্টগ্রাম বন্দর Oct 19, 2025
img
জাতিসংঘের অর্থসংকটে দেশে ফিরছে ১ হাজার ৩১৩ শান্তিরক্ষী Oct 19, 2025
img
ইসি স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে : হাসনাত আবদুল্লাহ Oct 19, 2025
img
যুদ্ধ বিরতির পর বিপদে পড়েছেন নেতানিয়াহু Oct 19, 2025
img
বাংলাদেশ-কুয়েত পররাষ্ট্রস‌চিব পর্যায়ে বৈঠক চলছে Oct 19, 2025
img
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ৩ দিনে ডিএমপির ৪৫৮১ মামলা Oct 19, 2025
img
আজ থেকে বাড়ল মেট্রোরেল চলাচলের সময় Oct 19, 2025
img
আ. লীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান Oct 19, 2025