উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েই নাকি সবচেয়ে ভালোভাবে বোঝা যায় খেলার গতিপথ। তাই তো বোলারদের সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকেন উইকেটরক্ষকরা। ভারতীয় কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিং ধোনিকে প্রায়ই দেখা যেত এ কাজ করতে। এবার বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক লিটন দাসও দেখা দিলেন ঠিক সেই ভূমিকায়। তবে তিনি বেছে নিলেন এক অভিনব কৌশল যাতে প্রতিপক্ষ কিছুই আঁচ করতে না পারে।
ঘটনাটা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে। বাংলাদেশের বোলিং শুরু করেছিলেন শেখ মেহেদী হাসান। প্রথম ওভারে দিয়েছিলেন ৭ রান। পরে তাকে এনে দেওয়া হলো আক্রমণে, অন্য প্রান্ত থেকে। ওভারের প্রথম চার বলে প্রতিপক্ষ তুলল ৫ রান। ঠিক তখনই উইকেটের পেছন থেকে শোনা গেল লিটনের কণ্ঠ-
“বেশি বাতাস দিস না, ঝাড়ু মেরে দিবে।”
এখানে ‘ঝাড়ু’ মানে যে সুইপ শট তা ক্রিকেটবোদ্ধারা সহজেই বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু লিটন ইচ্ছে করেই পরিচিত ক্রিকেটীয় শব্দ ‘সুইপ’-এর বদলে ব্যবহার করলেন ‘ঝাড়ু’। একইভাবে ‘ফ্লাইট’ বলার বদলে বললেন ‘বাতাস’। কেন? কারণ, যদি ইংরেজি ক্রিকেট-টার্ম ব্যবহার করতেন, তাহলে প্রতিপক্ষ ব্যাটার বিক্রমজিত সিং কিংবা স্কট এডওয়ার্ডস বুঝে ফেলতে পারতেন কৌশলটা। সেই ঝুঁকি এড়াতেই মেহেদীকে ভিন্ন শব্দে বোঝানোর চেষ্টা করলেন লিটন।
উইকেটরক্ষকদের এমন সৃজনশীলতা অবশ্য নতুন কিছু নয়। সবচেয়ে বড় উদাহরণ মহেন্দ্র সিং ধোনি। পুরো ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার হিন্দি ভাষায় কোডওয়ার্ড ব্যবহার করে বোলারদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ‘স্টাম্প’ বলতেন ‘ডান্ডা’, ইনসুইংকে করতেন ‘আন্দার’, আউটসুইং হতো ‘বাহার’। উদ্দেশ্য একটাই প্রতিপক্ষ যেন কিছু আঁচ করতে না পারে।
এবার লিটন দাসকেও দেখা গেল সেই ধোনি-ধারার পথেই হাঁটতে। ভিন্ন শব্দে কৌশল বোঝানো, প্রতিপক্ষের অগোচরে পরিকল্পনা সাজানো বাংলাদেশি ক্রিকেটে যোগ হলো আরেকটি অভিনব অধ্যায়।
এসএস/টিকে