অতিরিক্ত ঘুমে স্বাস্থ্য ও মৃত্যুঝুঁকি

প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য স্বাভাবিকভাবে রাতে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। এর চেয়ে বেশি সময় ঘুমালে কার্ডিওভাসকুলার ডিসিস (সিভিডি) ও মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এক বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।

বিশ্বের সাতটি অঞ্চলের ২১টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমায় তাদের কার্ডিওভাসকুলার ডিসিস যেমন স্ট্রোক, হার্টের কার্যহীনতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৪১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলেন, বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে অনেকেই দীর্ঘ সময় ব্যাপী ঘুমায়। কিন্তু এটা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা মানুষের মৃত্যুহার বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

ম্যাক-মাস্টার অ্যান্ড পেকিং ইউনিয়ন মেডিক্যাল কলেজের পিএইচডি শিক্ষার্থী চুয়াংশি ওয়াংয়ের নেতৃত্বে আরেকটি গবেষণায়ও দেখা গেছে যে, দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুম থেকে হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে। রাতে ৬ ঘণ্টার বেশি ঘুমানোর পরও দিনে অতিরিক্ত ঘুমালে তা কার্ডিওভাসকুলার ডিসিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তবে রাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে সেক্ষেত্রে এ ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন গবেষক ওয়াং।

তবে এটি ছিল একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা। তাই অতিরিক্ত ঘুমের ফলে কী কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে তা জানা যায় নি।

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের একজন বিশেষজ্ঞ (যিনি এই গবেষণায় সম্পৃক্ত নয়) বলেন, এ গবেষণায় খুব চমৎকার ফলাফল পাওয়া গেছে। তবে এটি কারণ ও ফলাফল প্রমাণ করতে পারে নি। গবেষণায় দেখা যায়, যারা প্রতি রাতে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমায়, তাদের থেকে যারা প্রতি রাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমায়, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৯ শতাংশ বেশি। তবে পরিসংখ্যানগত দিক থেকে এ ফলাফল খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

এই গবেষণায়, ১১৬৬৩২ জন ব্যক্তির ঘুমের অভ্যাস পর্যালোচনা করা হয়। দেখা যায়, যারা দৈনিক রাতে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমায় তাদের হৃদরোগ বা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রতি হাজারে ৭.৮। অন্যদিকে, যারা ৬ ঘণ্টার কম ঘুমায় তাদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৯.৪। আবার, ৮-৯ ঘণ্টা ঘুমের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি প্রতি হাজারে ৮.৪। যেখানে ৯-১০ ঘণ্টা ও ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমের ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে এ ঝুঁকি যথাক্রমে ১০.৪ ও ১৪.৮।

অন্যদিকে, ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক (যিনি এই গবেষণায় সম্পৃক্ত নয়) প্রফেসর ফ্রান্সিস্কো কাপুসিও ঘুম ও এর প্রভাব নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, এটা নিশ্চিত যে মৃত্যুর ঝুঁকির সঙ্গে কম ঘুমের সম্পর্ক রয়েছে। কারণ, ঘুম কম হলে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা ও ডায়াবেটিসসহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধি হতে পারে।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ