হৃদপিণ্ডের সমস্যা চিহ্নিত করতে এআই পদ্ধতি

হৃদরোগ সনাক্তের নতুন পদ্ধতি হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর ফর্মুলা খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি একদল ব্রিটিশ গবেষক এর উদ্ভাবন করেন।

ব্রিটেনের দশ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোক এবং দীর্ঘ মেয়াদী হার্টের সমস্যার ঝুকিতে রয়েছে। আর তাদের এ অবস্থার জন্য অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনকেই দায়ী করা হয়।

গবেষকরা বলছেন, অনিয়মিতভাবে হৃদকম্পন হলেও সেটা তুলনামূলকভাবে নির্ধারণ করা সহজ। তবে যখন এটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে তখন তা নির্ধারণ করা যায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের মেয়ো ক্লিনিকে কম্পিউটার মডেলিংয়ে এমন লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা যেতে পারে যা পূর্ববর্তী অস্বাভাবিকতাগুলো নির্দেশ করে।

গবেষকদের দাবি, এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এ পদ্ধতিটি সমস্যার আগেই আপনাকে সহায়তা করবে। আপনি আগেভাগেই হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে কি না সেটি এ পদ্ধতিতে জানতে পারবেন। এর মাধ্যমে জীবন বাঁচানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা সহজ হবে।

আট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের লক্ষণ কি?

# হৃদযন্ত্র যখন অনিয়মিতভাবে ওঠানামা করে। মাঝে মাঝে ধড়ফড় করে।

# হার্টের পালস খুবই দ্রুত গতিতে চলতে থাকে। প্রতি মিনিটের ১০০ বা তারও বেশি বার ওঠানামা করতে পারে।

# এসময় আপনি আপনার ঘাড় বা কব্জির মধ্যের নার্ভ পরীক্ষা করে আপনার হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করতে পারেন।

# অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে ক্লান্তি এবং ব্যায়াম করতে গেলে হাঁপিয়ে যাওয়া, শাসকষ্ট হওয়া, অজ্ঞান লাগা বা হালকা মাথা ও বুকে ব্যথা হতে পারে।

# অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন হার্টকে যেভাবে প্রহার করে তা হৃদয়ের কর্মক্ষমতা এবং দক্ষতা কমিয়ে দেয়।

# এটি নিম্ন রক্তচাপ এবং হার্ট ফেইলিওরের কারণ হতে পারে।  

# কখনও কখনও অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। যে ব্যক্তির মধ্যে এটি রয়েছে তার হৃদস্পন্দন অনিয়মিত কিনা সে বিষয়টিও সম্পূর্ণ অজানা থাকে।

বর্তমানে এই পরীক্ষাগুলো একটি তড়িৎ কার্ডিওগ্রাম হিসেবে পরিচিত। সহজে একে ধরা যায় না। তাই রোগীকে দীর্ঘ মেয়াদে পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা।

তবে এর পরিবর্তে মডেলিংয়ে হৃৎপিন্ডের ক্ষতচিহ্নগুলো সহ অতীতের অনিয়মিত ছন্দের সুক্ষ্ণ লক্ষণগুলো যা পরীক্ষার ফলাফল থেকে মানুষের চোখের দাগে ফেলতে পারছে না।

১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৮১ হাজার রোগীর ওপর কম্পিউটার মডেলিংয়ের একটি বিশ্লেষণযোগ্য পরীক্ষা করা হয়। প্রথমবার পরীক্ষায় যাদের সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল। অর্থাৎ এই মডেলিংটি ৮৩ ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ পরীক্ষার ফলাফল থেকে পরবর্তী রোগ নির্ণয়টি সঠিকভাবে হয়।

মেয়ো ক্লিনিকের গবেষক ডক্টর পল ফ্রিডম্যান এ পদ্ধতির আসল ক্ষমতা সম্পর্কে যেমনটি বলেছেন, এটি একটি প্রকৃত সম্ভাবনা। এটি এমন যেন সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলতে সক্ষম হওয়া যে গতকাল এখানে বিশাল ঢেউ ছিল।

যদিও গবেষক দলটি বলছে যে, ফ্রন্টলাইনে এটি মোতায়েন করা যায় কি না সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরো পরীক্ষার প্রয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজির বিশেষজ্ঞ প্রফেসর টিম চিকো এই গবেষণাগুলোকেঅত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণহিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এআই-ভিত্তিক এই পদ্ধতিটি একটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। যদিও এটি সত্যি যে এই গবেষণাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবুও আমাদের আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে যে টি সাধারণ জনগণের ওপর পরীক্ষার কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়।

 

টাইমস/এমএস/এসআই

 

Share this news on: