যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পরিকল্পনায় বাংলাদেশী যুবক গ্রেপ্তার

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনার অভিযোগে আশিকুল আলম (২২) নামে এক বাংলাদেশী যুবককে গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা।

৬ জুন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৭ই জুন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে নিউইয়র্কের একটি আদালতে হাজির করা হয়। খবর বিবিসি’র।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে ব্রুকলিনের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক শেরিল এল পোলক তাকে স্থায়ীভাবে আটক করে রাখার আদেশ দিয়েছেন।

আশিকুল আলমের বাড়ি বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায়। তিনি কুইন্সে বসবাস করতেন। অর্ধযুগ আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়া আশিকুল আলম সেখানকার জন জে কলেজ অফ ক্রিমিনাল জাস্টিস - এর তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন। তার বাবা মো. শাহজাহান ম্যানহাটনের একটি ফুড কোর্টের ব্যবসায়ী বলে জানা যাচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস এবং আল কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ভীষণ প্রশংসা করেন আশিকুল আলম। তিনিই টাইমস স্কয়ারে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। এ জন্য ছদ্মবেশী এক গোয়েন্দা এজেন্টের কাছ থেকে একজোড়া আধা-স্বয়ংক্রিয় পিস্তল কেনার বন্দোবস্ত করেছিলেন। বলা হয়েছিল, ওই পিস্তলের সিরিয়াল নাম্বার তুলে ফেলে তার কাছে সরবরাহ করতে হবে। এছাড়া সে সুইসাইড ভেস্টের প্রতি আগ্রহ দেখায়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, আশিকুল আলম চোখে চশমা ব্যবহার করেন। কিন্তু হামলা চালানোর সময় যদি তা পড়ে যায় তাহলে তার দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হবে। এ জন্য তিনি সম্প্রতি চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করাতে অপারেশন করিয়েছেন। ফেডারেল চার্জে এ কথা বলা হয়েছে। তিনি টাইমস স্কয়ারে আত্মঘাতী ভেস্ট অথবা এআর-১৫ রাইফেল দিয়ে হামলা চালাতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি ও ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দা বেশ কয়েকবার প্রাথমিক অনুমান হিসাব নির্ধারণে টাইমস স্কয়ার পরিদর্শন করেছেন। সে বলেছিলো, সেখানে এমন হামলা চালানো গেলে তারা ‘লিজেন্ডে’ পরিণত হবেন। কিন্তু তাকে সঙ্গ দেয়া ব্যক্তি যে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা তা বুঝতে পারেন নি আশিকুল আলম।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের আগস্টে ছদ্মবেশি ওই গোয়েন্দার সঙ্গে আশিকুল আলমের প্রথম সাক্ষাত হয়। তবে কিভাবে তারা দু’জন একত্রিত হয়েছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয় নি। এ নিয়ে ওই ছদ্মবেশী এজেন্টের সঙ্গে তার ১০ মাস ধরে বৈঠক চলতে থাকে। এতে পরিকল্পনা, অস্ত্র কেনা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময়ই আশিকুল আলম আল কায়েদা ও আইএসের প্রশংসা করেন। কোর্টের ডকুমেন্ট অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলাকে তিনি একটি পরিপূর্ণ সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

নিউইয়র্কে এফবিআইয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা উইলিয়াম স্বয়েনি বলেছেন, তার উদ্দেশ্য ছিল একটি সন্ত্রাসী হামলা চালানো। তিনি অস্ত্র কিনে এই ভয়াবহ হামলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। হত্যা করতে চেয়েছিলেন নিউ ইয়র্কারদের, টার্গেট করতে চেয়েছিলেন নির্বাচিত কর্মকর্তাদের এবং হামলা করতে চেয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: