খুলনায় রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষের বাস্তুভিটা  

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্য বিকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে সু-প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার সাথে বাংলাদেশের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তার আদি সম্পর্কের অনেকে যশোর-খুলনা অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষের বাস্তুভিটা হিসেবে খ্যাত ‘কুশারীবাড়ি’ যেটা ফুল, ফল, বিচিত্র গাছপালায় ঘেরা একটি গ্রাম।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতভিটা বাংলাদেশের খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামে অবস্থিত। পাশে ভৈরব নদী। পিঠাভোগ গ্রামে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতভিটা বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্বিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত।

২০১৫ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক কবি গুরুর পূর্বপুরুষের বাস্তুভিটাকে ১৯৬৮ সালের (সংশোধিত ১৯৭৬ইং) প্রত্নতাত্ত্বিক আইনের আওতায় সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করা হয়।

খুলনার নওয়াপাড়া বিশ্বরোড থেকে ৭কি.মি. দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে পিঠাভোগ কাজদিয়া সেতু পার হয়ে ১ কি.মি. পূর্বে ঘাটভোগ ইউনিয়ন পরিষদের পাকারাস্তা ধরে খানিকটা অগ্রসর হয়ে প্রাচীন ভৈরব নদীর ৪০০ ফুট উত্তরপাড়েই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষের বসতভিটা কুশারীবাড়ির অবস্থান।

সরকারী উদ্যোগে পিঠাভোগে ৯.৩৫ একর জমির উপরে নির্মিত বসতভিটার খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভবনটি সমতল ভূমি থেকে চারফুট উঁচুতে অবস্থিত এবং ইন্দোইউরোপীয় ঔপনিবেশিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। দক্ষিণডিহি গ্রামে অবস্থিত একটি দেড়তলা পাকাবাড়ি ও সন্নিহিত ১ দশমিক ৪০ একর জায়গা জুড়ে রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ী অবস্থান।

১৯৯৪ সালে ২৪ নভেম্বর পিঠাভোগে রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রহশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। আছে উন্মুক্ত মঞ্চ। ওই ভবনের সামনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন রয়েছে।

রবীন্দ্রজীবনী থেকে জানা যায়, বিশ্বকবির পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর পিঠাভোগের কুশারীবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। কবির বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। কবি নিজে ১৮৮৩ সালে মামাবাড়ি দক্ষিণডিহিতে আসেন। সেই সময় তার বিয়ের কনেও দেখেন। পরে একাধিকবার খুলনা শহরে এসেছেন। তবে তিনি শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণডিহি বা পিতৃকুলের ভিটা পিঠাভোগে গেছেন এমন তথ্য পাওয়া যায় না। অবশ্য পিঠাভোগ নিয়ে তার আগ্রহ ছিল।

কিভাবে যাবেন: 

ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে খুলনায় যেতে পারবেন। ঢাকা ও খুলনার মধ্যে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে- হানিফ এন্টারপ্রাইজ, গ্রিন লাইন, ঈগল পরিবহন ইত্যাদি। ভাড়া শ্রেণিভেদে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

এছাড়া রেলযোগেও খুলনা যাওয়া যায়। এজন্য ঢাকা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস নামে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে।

খুলনা শহর থেকে বাসে করে রূপসা উপজেলায় গিয়ে সেখান থেকে স্থানীয় যানবাহনে পিঠাভোগ গ্রামে যাওয়া যাবে।

থাকার সুবিধা:

থাকার জন্য খুলনায় রয়েছে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল। তাদের মধ্যে কয়েকটি হলো- সিএসএস রেস্ট হাউজ (০৪১-৭২২৩৫৫), হোটেল ক্যাসেল সালাম (০৪১-৭৩০৭২৫), হোটেল রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল (০৪১-৮১৩০৬৭-৯), প্ল্যাটিনাম জুট মিলস লিমিটেড রেস্ট হাউজ (০৪১-৭৬২৩৩৫), এলজিইডি রেস্ট হাউজ (০৪১৭২৩১৮৩)।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: