কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার

বিভিন্ন কবি ও সাহিত্যিক তাদের লেখনীর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারকে করছেন সমৃদ্ধ। যাদের কারণে আমরা পেয়েছি একটি বৃহৎ সাহিত্য ভাণ্ডার। কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ছিলেন এমনই একজন কবি যিনি বাংলার সাহিত্য ভাণ্ডারকে তার লেখনীর মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন।

কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ছিলেন একাধারে শিক্ষক, কবি, সাংবাদিক এবং পত্রিকা সম্পাদক। কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ১৮৩৪ সালে খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাণিক্য চন্দ্র মজুমদার।

কৃষ্ণচন্দ্র ১৮৫৪ সালে বরিশালের কীর্তিপাশা বাংলা বিদ্যালয়ের প্রধান পন্ডিতপদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ঢাকার নর্মাল স্কুল, মডেল স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তিনি দীর্ঘ ১৯ বছর শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

তার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ‘সদ্ভাব শতক’ যা ১৯৬১ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। এই বইটির অধিকাংশ কবিতা নীতিমূলক, যা সুফি এবং হাফিজের ফার্সি কবিতার অনুসরণে রচিত। তার আত্মজীবনী গ্রন্থ রামের ইতিবৃত্ত। মহাভারতের ‘বাসব-নহুষ-সংবাদ’ অবলম্বনে রচিত তার আরেকটি গ্রন্থ হলো মোহভোগ, কৈবল্যতত্ত্ব নামে তিনি একটি দর্শনবিষয়ক গ্রন্থ লেখেন। এছাড়াও তার তার অপ্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পনেরো।

তার কবিতার কিছু বিখ্যাত চরণ- ‘যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি’, ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে’, ‌আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি'।

তিনি ১৮৬০ সালে মাসিক মনোরঞ্জিকা ও কবিতাকুসুমাবলী নামক পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৮৬১ সালে ‘’ঢাকা প্রকাশ প্রকাশিত হলে তিনি তার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৮৬৫ সালে বিজ্ঞাপনী নামক পত্রিকার সম্পাদক হন। ১৮৮৬ সালে যশোর থেকে তিনি সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় দ্বৈভাষিকী নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। কবিতাকুসুমাবলী ছিল পদ্যবহুল মাসিক পত্রিকা। তার সদ্ভাবশতক কাব্যের অধিকাংশ কবিতাই এ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

শেষ জীবনে কৃষ্ণচন্দ্র সেনহাটিতে বসবাস করেন এবং বিভিন্ন সঙ্গীত রচনা করে অবসর জীবন কাটান। ১৯০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এই কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ইনস্টিটিউট জাদুঘর। কবির স্মৃতির উদ্দেশ্যে দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামে ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই ইনস্টিটিউট। যেখানে স্থান পেয়েছে কবির ব্যবহার্য জিনিসপত্র।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: