বাংলাদেশে প্রতি চারজনের একজন দারিদ্র্যে বাস করছে: বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে প্রতি চারজনের একজন দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সিয়া টেম্বন বলেন, ‘গত এক দশকে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। কিন্তু এখনও প্রতি চারজনের একজন দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে।’

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ পোভার্টি অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।

মার্সিয়া টেম্বন বলেন, দারিদ্র্য কমানোর জন্য, বিশেষ করে দারিদ্র্যের নতুন ক্ষেত্রগুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। কারণ ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের অর্ধেকই শহরে বাস করবে বলে প্রক্ষেপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের তথ্য নিয়ে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের পূর্ব এবং পশ্চিমের বিভাগগুলোর মধ্যে দারিদ্র্য পরিস্থিতির ঐতিহাসিক পার্থক্য আবার ফিরে এসেছে।

উল্লেখিত সময়ে পশ্চিমের রংপুর বিভাগে দারিদ্র্য বেড়েছে, রাজশাহী ও খুলনায় পরিস্থিতির পরিবর্তন নেই। অন্যদিকে চট্টগ্রামে দারিদ্র কমেছে পরিমিতভাবে, বরিশাল, ঢাকা ও সিলেটে কমেছে দ্রুতগতিতে।

২০০৫-২০১০ সালের একই সময়ে যেখানে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর এক দশমিক সাত শতাংশ হারে দারিদ্র্য কমেছে, সেখানে ২০১০-২০১৬ সালে দেশে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে বছরে এক দশমিক দুই শতাংশ হারে।

এই সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হার সবচেয়ে বেশি কমায় বরিশাল জেলা। এখানে ২০১০ সালে দারিদ্র্য হার ছিল ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৪ শতাংশে। একইভাবে চট্টগ্রামের দারিদ্র্য হার ২৬ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসে। আর সিলেটের দারিদ্র্য হার ২৮ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১৬ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসে।

উল্টোদিকে দেখা গেছে, ২০১০ সালে রংপুরে যেখানে দারিদ্র্য হার ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল, উল্লেখিত সময়ে তা বেড়ে ৪৭ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে।

দারিদ্র্য কমার এই চিত্রে তিনি পূর্ব-পশ্চিমের ঐতিহাসিক পার্থক্য ফিরে আসার শঙ্কা দেখছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১০-২০১৬ সময়ে দারিদ্র্য বিমোচনের ৯০ শতাংশই হয়েছে গ্রামে। শহরে দারিদ্র্য কমেছে সীমিতভাবে। অতিদরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে শহরের লোকের অবস্থান প্রায় একই রয়ে গেছে। ফলে জাতীয় দারিদ্র্য বিমোচনের গতি শ্লথ হয়েছে।

 

টাইমস/এএইচ/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ