দাবি মানার পরও আন্দোলনের কি যৌক্তিকতা: প্রধানমন্ত্রী

বুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার পরও তাদের আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাধারণ ছাত্ররা যারা, তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়েছে ভিসি। তারপরও না কি তারা আন্দোলন করবে। কেন করবে, জানি না। এরপর আন্দোলন করার কি যৌক্তিকতা থাকতে পারে।

শনিবার মহিলা শ্রমিক লীগের দ্বিতীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন। ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে বুয়েটে যে ঘটনা ঘটেছে। আমরা তো পিছিয়ে থাকিনি। কোন দল করে, সেটা না, খুনিকে খুনি হিসেবে দেখি। অন্যায়কারীকে অন্যায়কারী হিসেবে দেখি। অত্যাচারীকে অত্যাচারী হিসেবে দেখি। খবরটা পাওয়ার সাথে সাথে কারও আন্দোলনের অপেক্ষা করিনি, কারও নির্দেশের অপেক্ষা করিনি, সঙ্গে সঙ্গে আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি যে এদেরকে গ্রেপ্তার করা এবং ভিডিও ফুটেজ থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করতে।’

আবরার হত্যা সংক্রান্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে  পুলিশ বাধার মুখে পড়ে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ভিডিও ফুটেজ যখন সংগ্রহ করছে তখন তারা বাধা দিয়েছিল, কেন বাধা দিয়েছিল, আমি জানি না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে পুলিশের আইজিপি ছুটে আসলো.. কী করব। বললাম, তারা কী চায়। বলল, কপি চায়। বললাম কপি করে তাদের দিয়ে দাও। তোমরা তাড়াতাড়ি ফুটেজটা নাও, এটা নিলেই তো আমরা আসামি চিহ্নিত করতে পারব, ধরতে পারব, দেখতে পারব এবং সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে পারব।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই তিন-চার ঘণ্টা সময় যদি নষ্ট না করত, তাহলে তার আগেই হয়ত অনেকে পালাতে পারত না, তারা ধরা পড়তে পারত। এখানে সন্দিহান হওয়ার কিছু ছিল না। বিষয়টা কী আমি জানি না। সন্দিহান, না কি যারা জড়িত তারা বাধা, কোত্থেকে কী করেছে, বুঝতে পারি না। মনে হলো যেন আসামিদের চলে যাওয়ার একটা সুযোগই করে দেয়ার.. না কি ছিল..ওই আন্দোলন যারা করেছে তারা বলতে পারবে।’

‘আমি কিন্তু এক মিনিট দেরি করিনি। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি এই ধরনের অন্যায় করলে কখনও তা মেনে নেয়া যায় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়ার আমল থেকে শুরু করে এরশাদের আমলে, সব সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিল একটা অস্ত্রের ঝনঝনানি। মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হয়েছিল। হিজবুল বাহার নামে যে জাহাজে জাতির পিতা বাংলাদেশের জনগণকে হজ করতে পাঠাত, হজ করা বন্ধ করে দিয়ে সেটা হয়ে গেল প্রমোদতরী।’

২০০২ সালের ৮ জুন ছাত্রদলের দুই গ্রুপের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের মেধাবী ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রদলের দুই গ্রুপ বুয়েটে। তাদের টেন্ডার নিয়ে গোলাগুলিতে মারা গেল সাবেকুন নাহার সনি। সেই হত্যার কি বিচার হয়েছে? তখন কে প্রতিবাদ করল? তখন আমাদের বুয়েটের যারা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, তারা তো নামে নাই। তাদেরকে তো তখন নামতে দেখিনি। তখন তো প্রতিবাদ করতে দেখিনি তাদের। তখন তো তারা কোনো কথা বলেনি। হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সবার কথা বলার অধিকার আছে। বলতে পারে অন্তত, এই সুযোগটা আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো অন্যায়-অবিচার আমরা সহ্য করব না, করি নাই। ভবিষ্যতেও করব না। যারাই করুক, সে যেই অপরাধী হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার পরিবেশ রাখতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রওশন জাহান সাথী, সাধারণ সম্পাদক শামসন্নাহার ভূঁইয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় পাকিস্তানের স্পিকার Dec 31, 2025
img
২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পুঁজিবাজারে সর্বনিম্ন পারফরম্যান্স বাংলাদেশের Dec 31, 2025
img
ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর Dec 31, 2025
img
ইসহাক দার ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ Dec 31, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ঘিরে ৫০ প্লাটুন আনসার মোতায়েন Dec 31, 2025
img
সংসদ ভবনে পৌঁছেছে খালেদা জিয়ার মরদেহ Dec 31, 2025
img
দেশ ও দেশের মানুষই ছিল তাঁর পরিবার : তারেক রহমান Dec 31, 2025
img
হলফনামার বিবরণ দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ Dec 31, 2025
img
২১ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ Dec 31, 2025
নববর্ষ পালন করা কি জায়েজ? | ইসলামিক প্রশ্নোত্তর Dec 31, 2025
img
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে সিগারেট বিক্রি করলে ৫০০০ টাকা জরিমানা Dec 31, 2025
চট্টগ্রাম থেকে খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে যা বললেন বিএনপি নেতা Dec 31, 2025
img
মহান অভিভাবক হারাল জাতি: প্রধান উপদেষ্টা Dec 31, 2025
img
বিশ্ব বাজারে সোনার দামে রেকর্ড, বার-কয়েনে ঝুঁকছেন ক্রেতারা Dec 31, 2025
img
শহীদ শফিকুলকে নিয়ে জামায়াত আমিরের ফেসবুক পোস্ট Dec 31, 2025
img
আসন্ন নির্বাচনে পোস্টাল ভোট বিডিতে নিবন্ধন ১১ লাখ ১৮ হাজার Dec 31, 2025
img
হাসিনার শোকবার্তা ভণ্ডামির বহিঃপ্রকাশ কি না, সন্দেহ বার্গম্যানের Dec 31, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার কবরের জায়গা পরিদর্শন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার Dec 31, 2025
img
সংসদ ভবনের পথে খালেদা জিয়ার মরদেহ Dec 31, 2025
img

খালেদা জিয়ার জানাজা

রেড-গ্রিন-হোয়াইট জোনে ভাগ করা হয়েছে নিরাপত্তা স্তর Dec 31, 2025