চুক্তিতে ভারতকে শুধু দেয়ার কথা আছে, নেয়ার কথা নেই: খন্দকার মোশাররফ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই সরকার যে চারটা চুক্তি করে এসেছে, এগুলোর মধ্যে শুধু দেয়া আছে, নেয়ার কথা কোথাও লেখা নাই। তিস্তা কতদিন যাবত আমাদের বিরাট সমস্যা, এটার কোনো কথা নাই, আমাদের ৫৪টা অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে দিয়েছে ভারত, এগুলোর বিষয়ে কোনো আলোচনা নাই।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন খন্দকার মোশাররফ।

ফেনী নদীর পানি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে সামান্য পানি দিয়েছেন। আমরা ইতোমধ্যে পত্রিকায় দেখেছি যে, ১.৮ কিউসেক যে পানি দিয়েছে, তার আগেই না কি তারা ৩৬টা পাম্প দিয়ে বেআইনিভাবে ৭২ কিউসেক পানি নিচ্ছে। তাই আমরা মনে করি, এগুলো দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি।’

চুক্তির সমালোচনাকারী বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের পেছনে যারা ছিলেন, তাদেরও বিচার জনগণ একদিন করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ।

সভায় খন্দকার মোশারফ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি তাজুল ইসলাম গাজী, বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী, ফরিদউদ্দিন প্রমুখ।

যুবলীগের চেয়ারম্যান হতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমানের আগ্রহ দেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,  ‘আজকের পত্রিকায় দেখলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মীজানুর রহমান ঘোষণা করেছেন যুবলীগের যদি তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তিনি উপাচার্যের পদ ছেড়ে দেবেন। আমি আকাশ থেকে পড়েছি। ধিক, লজ্জার। সমাজ কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে? কী জন্য? যুবলীগের দায়িত্বে গেলে ক্যাসিনো চালানো যায়, যুবলীগের দায়িত্বে গেলেই টেন্ডার, যুবলীগের দায়িত্বে গেলে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করার ব্যবস্থা আছে। চিন্তা করেন, একজন ভাইস চ্যান্সেলরের লক্ষ্য কী হয়ে গেছে!’

শুক্রবার এক টেলিভিশন টকশোতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেছেন, যুবলীগকে সুপথে ফেরাতে তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হলে তা নিতে উপাচার্যের পদ ছাড়তে তিনি রাজি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মীজানুরকে কয়েক বছর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দেয়া হয়। বিএনপি নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, হলের ভিপি ছিলাম, একটি ছাত্রসংগঠনের (ছাত্রলীগ) নেতা ছিলাম, তারপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হয়েছি, অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসার, প্রফেসার হয়েছি, বিভাগীয় চেয়ারম্যান সব হয়েছি। একজন ভাইস চ্যান্সেলর একটি দলের অঙ্গ সংগঠনের প্রধান হতে চান, যে সংগঠনটি বর্তমানে দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজ-টেন্ডারবাজের জন্য বিখ্যাত। এর চাইতে সমাজের পচনের উদাহরণ আর এর থেকে বেশি আর হতে পারে না।'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ টেনে এই বিএনপি নেতা বলেন, 'জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ছাত্রলীগ নেতাদের ঈদের বখশিশ দিয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যে ভাইস চ্যান্সেলর ঈদের সালামী দেন ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, তাহলে তিনি কি করছেন? উনার কাছে কি টাকার গাছ আছে, না টাকা বানানোর মেশিন আছে?'

খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'এই সরকার জনগণের সরকার নয় বলে সব স্তরে আজ পচন লেগেছে।জবাবদিহিতার অভাবে এমন অবস্থা হয়েছে যে, শুধু খালেদা জিয়াকে একা কারাগারে রাখে নাই, কারাগারে বন্দি করেছে এদেশের গণতন্ত্রকে। একজনের স্বপ্ন আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্য এটা করেছে।'

এই অবস্থা পরিবর্তনে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারামুক্ত করতে আন্দোলনে নামতে সবাইকে আহ্বান জানান খন্দকার মোশাররফ।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আওয়ামী লীগ রাজপথে নামলেই তাদের ধোলাই করা হবে : রাশেদ খাঁন Nov 10, 2025
img
দায়িত্ব পালনের সময় মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করলো ডিএমপি Nov 10, 2025
img
সিন্ডিকেট ছেড়ে দেওয়ার জন্য আফসোস করি: তিশা Nov 10, 2025
বর্তমান যুগে বিয়ে না করার কারণ কি? | ইসলামিক প্রশ্নোত্তর Nov 10, 2025
img
ক্ষমতার লোভে বিএনপি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করেনি: ইশরাক হোসেন Nov 10, 2025
শুরুতে প্রত্যাহার শেষমেশ বরখাস্ত গাজীপুরে পুলিশ কমিশনার Nov 10, 2025
শেরপুরে কৃষি কর্মকর্তার উপর হামলার প্রতিবাদে কুমিল্লায় মানববন্ধন Nov 10, 2025
ধানের শীষে ভোট চাওয়ায় ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা জামায়াত নেতার! Nov 10, 2025
img
শুভমিতার কন্ঠে জীবনানন্দ দাশের কবিতা Nov 10, 2025
img
ডিএমপির নতুন নির্দেশনা, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা Nov 10, 2025
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তেজনার মধ্যেই ভেনেজুয়েলার রুশ ক্ষেপনাস্ত্র Nov 10, 2025
img
গোপনে ক্যাম্প ন্যুতে ফিরলেন মেসি, চমকে উঠলো বার্সা সমর্থকরা Nov 10, 2025
১৩ নভেম্বর ঘিরে অস্থিরতা! জবাবে যা বললেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা Nov 10, 2025
img
কিছু দল বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল Nov 10, 2025
img
চৌদ্দগ্রামে সিএনজি অটোরিকশা-ট্রাক সংঘর্ষে প্রাণ গেল ৩ জনের Nov 10, 2025
img
জন্মদিনে গ্ল্যামারাস লুকে ভক্তদের মুগ্ধ করলেন মিম Nov 10, 2025
img
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হওয়ার জন্য বিএনপি-জামায়াত দায়ী : সারোয়ার তুষার Nov 10, 2025
img
দুই ম্যাচ খেলতে আজ বিকেল পাঁচটার পর ঢাকায় এসেছেন হামজা Nov 10, 2025
img
১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসবেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা Nov 10, 2025
img
মার্কা বেছে নয়, যে দলকে বিশ্বাস করেন তাকেই ভোট দিন : মান্না Nov 10, 2025