সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা না গেলে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘৭ নভেম্বর প্রজন্ম’ আয়োজিত ড. মারুফ মল্লিকের লেখা ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ : নাগরিক ও জাতীয়তাবাদী জাতীয়তাবাদের সংকট’ শীর্ষক বইয়ের ওপর আলোচনাসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মঈন খান অভিযোগ করেন, ‘বিগত সরকার যে পরিমাণ লুটপাট করেছে, তা দিয়ে ১০০টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত।’ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের পাঁচ বছরের বাজেটের সমান বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের ধনিক শ্রেণি দুর্নীতির মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে। এই দুর্নীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে, আর একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ফুলেফেঁপে উঠছে।’
মঈন খান বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একজন সৎ ও আদর্শবান নেতা ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অসততার অভিযোগ আওয়ামী লীগও কোনো দিন আনতে পারেনি। তার সততা ছিল প্রশ্নাতীত।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন একটি সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ এবং জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই হতে পারে না।’
মূল প্রবন্ধে ৭ নভেম্বর প্রজন্মের সদস্য ইয়াছির ওয়াদাদ তন্ময় বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ : সংকট উত্তরণের একমাত্র দর্শন। আমরা মনে করি, এমন বহুমুখী সংকটে সমাধানের একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এটি বিভেদ নয়, বরং ভূখণ্ড, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করে। বিদেশি প্রভাবমুক্ত স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথ প্রশস্ত করে। গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও জনগণের ক্ষমতায়নকেই এর মূল লক্ষ্য হিসেবে ধারণ করে। অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটাতে ও বহিঃশক্তির চাপ প্রতিহত করতে এ জাতীয়তাবাদই সক্ষম দর্শন।
তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ শুধু রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সংকটেই নয়, বরং অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র কার্যকর সমাধান হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্র ও সমাজের কেন্দ্রীয় দর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমান ও ভবিষ্যতের পথচলায় এ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইয়াছির ওয়াদাদ তন্ময়। সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো সেলিম ভূঁইয়া। এ ছাড়া আরো বক্তব্য দেন ড. মারুফ মল্লিক, সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজি, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আহসানুল হক শুভ্র, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা সম্পাদক হারুন উর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নুরুল হুদা বাবু, সাবেক ১ নম্বর সদস্য ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ সোলায়মান কবির, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল হাসান আরিফ, ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিংকু প্রমুখ।
এসএস/এসএন