জাতিসংঘের সতর্কবার্তা, মিয়ানমারে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়

ক্ষমতাসীন জান্তার অধীনে আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন হবে মিয়ানমারে। নির্বাচনকে সফল করতে ইতোমধ্যে জোরেশোরে প্রস্তুতিমূলক তৎপরতা শুরু করেছে সামরিক সরকার; তবে জাতিসংঘ সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, এই নির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধ হবে না।

মঙ্গলবার কানাডার হ্যামিল্টন শহরে এক অনুষ্ঠানে এ সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর ইউএন হাই কমিশনার অব হিউম্যান রাইটস-এর শীর্ষ নির্বাহী ভলকের তুর্ক। নিজ বক্তব্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর সেনাবাহিনীর চালানো নিপীড়ণকে টেনে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেছেন, এই নির্বাচন মিয়ানমারের সহিংসতাকে আরও উসকে দেবে।

“এ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, অবাধও হবে না। বর্তমানে মিয়ানমারের জনজীবন, বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু যারা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন বছরের পর বছর ধরে, সামরিক সরকারের অধীনে নির্বাচন সেই দুর্দশার লাঘব করবে না, বরং নির্যাতনের দীর্ঘ ইতিহাসে আরও একটি অধ্যায় যোগ করবে।”

২০২৭ সালের আগস্টে রাখাইনে কয়েকটি সেনা ছাউনি ও পুলিশ স্টেশনে একযোগে বোমা হামলা চালায় রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। সেই হামলার পর রাখাইনে ভয়াবহ অভিযান শুরু করে সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের সেনাদের হত্যা, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ সহ্য করতে না পেরে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে তুর্ক জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ফের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, যা এখনও চলছে। গত দেড় বছরের ও বেশি সময় ধরে রাখাইনে বিমান হামলা, বেসামরিকদের হত্যা, তাদের সহায় সম্পত্তি ধ্বংস-লুটপাট এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তার চলছে।

তুর্ক বলেন, “আমরা কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। সেসব দেখে আমাদের মনে হয়েছে, রাখাইনে আবার ২০১৭ সালের আগস্ট মাস ফিরে এসেছে।” “বর্তমানে মিয়ানমারে যে সংকট চলছে, তা থেকে উত্তরণের পথ হলো সহিংসতা পরিহার, বেসমারিকদের রক্ষা করা, দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা প্রদান করা, সংলাপ এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনা। নির্বাচন নয়; বরং এখন নির্বাচন হলে তা সহিংসতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।”

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জে টহল ও ড্রোন নজরদারি, নতুন উত্তেজনায় চীন-জাপান-তাইওয়ান Nov 17, 2025
পিরোজপুরে এবার সবচেয়ে বড় ইয়াবা চালান জব্দ Nov 17, 2025
প্রাথমিকের ডিজির ক্ষমতা ফিল্ড মার্শালের চেয়েও বেশি: গোলাম মাওলা রনি Nov 17, 2025
ভয়াবহ খরা মোকাবেলায় আকাশে ‘মেঘ বীজ’ বপনে তৎপর ইরান Nov 17, 2025
‘শাটডাউন’ ঘিরে রাজধানীর স্কুলগুলোতে নিরাপত্তা উদ্বেগ Nov 17, 2025
'সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবেলা করতে হবে' Nov 17, 2025
কুমিল্লায় নেচে-গেয়ে খন্দকার মোশারফের নেতৃত্বে বিএনপির মিছিল Nov 17, 2025
আল্লাহ'র তরফ থেকে গজবের কারণে আমার বোন শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়েছে: কাদের সিদ্দিকী Nov 17, 2025
বিতর্কিত ভিডিও প্রসঙ্গে স্পষ্ট বক্তব্য দিলেন মিথিলা Nov 17, 2025
img
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১ Nov 17, 2025
img
বিবাহবিচ্ছিন্ন পুরুষকে মেয়েরা মানে, নারীর ক্ষেত্রে উল্টো: অনুরাধা Nov 17, 2025
img
ভক্তদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’-এর তৃতীয় কিস্তি আসছে Nov 17, 2025
img
সিলেটে মধ্যরাতে গাড়ি মেরামতের দোকানে আগুন Nov 17, 2025
img
যেসব দেশে বিয়ে করলেই মিলবে নাগরিকত্ব Nov 17, 2025
img
ককটেল বিস্ফোরণে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, তার জনক একজনই: সোহেল তাজ Nov 17, 2025
img
বংশালে জুতার কারখানায় আগুন, ঢামেক বার্নে ভর্তি দগ্ধ ৩ শ্রমিক Nov 17, 2025
img
মেয়ের জন্য সব কৃতিত্ব স্ত্রীকেই দেন অভিষেক Nov 17, 2025
img
তিতুমীর কলেজ ও আমতলীতে ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন Nov 17, 2025
img
কিশোরগঞ্জে গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার মামলার রায়, ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা Nov 17, 2025