কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, এই যে জামায়াতের লোকেরা আমার পাশে বসে আছে, এটাও আমার কাছে কোন দল না। তাদের সঙ্গে আমার বিরোধ, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তারা যা করেছে, সেটা অন্যায় ছিল। কাজগুলো অন্যায় হয়েছে। আজকের সন্তানেরা সেই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল না। বাংলাদেশে যাদের জন্ম, তারা জামায়াতে ইসলামের ও আওয়ামী লীগের সন্তানই হোক আমার কাছে কোনো পার্থক্য নেই। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দির পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর সেই সময়ের জামায়াতে ইসলামী যে কাজ করেছে, তার জন্য যদি ক্ষমা প্রার্থনা না করে এবং সেই রকম ক্ষমা প্রার্থনা, যে রকম ক্ষমা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গ্রহণ করে সেই রকম ক্ষমা প্রার্থনা না করলে যত হাজার আর লাখই লোক হোক। বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় কোনো দিন জামায়াতে ইসলামী যেতে পারবে না। এটা আমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে, তাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে। তারা যদি আমার দেশের বাড়ি-ঘর না পুড়ত, আমার মা-বোনদের সম্মান নষ্ট না করত, তাহলে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হওয়া খুব সহজ হতো না। কারণ আমাদের হাতে যে অস্ত্র ছিল, তার চেয়ে হাজার গুণ শক্তিশালী অস্ত্র ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে। আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। অস্ত্র কোনো শক্তি না, আল্লাহ রাজি-খুশি না থাকলে পৃথিবীতে কেউ কিছু অর্জন করতে পারে না। আমি তার শ্রেষ্ঠ প্রমাণ।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি সেবক হিসেবে জন্মেছি, আমার কাজ মানুষের সেবা করা। সেখানে জাতপাত, ধর্ম, দলমত কোনো কিছুই নির্ভর করে না। আমার কাছে কোন দুঃখী মানুষ সে কোন দল করে সেটা আমার কাছে পরিচয় নয়। আমার কাছে দুঃখী মানুষ কোন ধর্মের এটা কোন পরিচয় নয়। আমি সবাইকে বলবো আমি দল করেছিলাম সেবা করার জন্য, ক্ষমতা দেখানোর জন্য না। আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট ক্ষমতা দিয়ে ছিলেন। এখন আমাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর মাথার ওপর যখন প্রস্রাব করা হয়েছে। তারপর আর আমি কিছু চাই না। আমাকে এখন প্রস্রাব করুক আর গলা কাটুক তাতে কিছুই যায় আসে না। আল্লাহ আর রাসুলকে বিশ্বাস করে আমি এতটা পথ চলেছি, আগামীতেও চলব। আমার কাছে কোন শত্রু নাই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ আমার বন্ধু। আমি তার কল্যাণ কামনা করি। আমার কাছে দলমত নাই।
এ সময় টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে পাশে বসে কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য শোনেন। এতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসএস/এসএন