আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বাংলাদেশসহ দুই শতাধিক দেশ ব্যবহার করে হারমোনাইজড সিস্টেম বা এইচএস কোড। বাংলাদেশে এই কোড ৮ সংখ্যার। সমজাতীয় সব পণ্যের প্রথম চার সংখ্যা একই, পরের চার সংখ্যায় তুলে ধরা হয় পণ্যের সুনির্দিষ্ট পরিচিতি। এর ওপর ভিত্তি করে শুল্ক আদায় করে কাস্টমস।
এইচএস কোড জটিলতায় পড়েননি এমন আমদানি-রফতানিকারক মেলা ভার। বিশেষ করে ফাস্ট ফ্যাশনের যুগে অহরহ আমদানি করতে হয় নিত্য-নতুন কাঁচামাল ও আনুসঙ্গিক পণ্য।
কারণ, অনেক সময় প্রচলিত এইচএস কোডে কোনো কোনো পণ্য চিহ্নত করা যায় না। যার খালাস আটকে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
অনেক ক্ষেত্রে এইচএস কোড জটিলতা সমাধানে দীর্ঘসূত্রতায় ক্রয়াদেশও হারান রফতানিকারক বা গুনতে হয় বড় অংকের মাশুল। অবশ্য বন্ড লাইসেন্সধারী যারা পণ্য রফতানির শর্তে বিনাশুল্কে কাঁচামাল আমদানি করেন, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গেল ৯ সেপ্টেম্বর জারি করা এসআরওতে বলা হয়েছে, এইচএস কোডের প্রথম চার সংখ্যা মিললেই পণ্য খালাস করা যাবে। আর কোনো কাঁচামাল এইচএস কোডে না পরলে তা কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে যুক্ত করে সর্বোচ্চ দুদিনের মধ্যে পণ্য খালাসের সুযোগ রাখা হয়েছে। যা পণ্য বৈচিত্রকরণে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন রফতানিকারকরা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী পরিচালক ফজলে এহসান শামীম বলেন, ‘এইচএস কোডের প্রথম চার সংখ্যা মিললেই পণ্য খালাসের সুযোগ ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমবে। সেইসঙ্গে পণ্য ছাড়ে অর্থ ও সময় দুই-ই বাঁচবে।’
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মজুমদার আরিফুর রহমান বলেন, ‘সব কোড ঠিক কিন্তু একটা কোডের কারণে পণ্য পড়ে থাকে। ফলে পণ্যের জন্য কাসটমসকে টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। এখন যে সুবিধা দিচ্ছে এতে আমরা স্বস্তিবোধ করছি। এতে কাসটমসকে আর বাড়তি টাকা দিতে হবে না।’
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, এনবিআর যে এইচএস কোড ব্যবহার করে সেটা আন্তর্জাতিক এইচএস কোডের সমন্বয় থাকতে হবে এবং একই ধরনের হতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে পারলে কোড নিয়ে সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হবে।’
পিএ/টিএ