আল্লাহ নিশ্চয়ই মৃত্যুর পর মুগ্ধর সাথে আমার দেখা করাবেন: স্নিগ্ধ

একই দিনে জন্ম নেওয়া যমজ ভাই মুগ্ধর মৃত্যুজন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে মির স্নিগ্ধ তার গভীর শোক ও অনুভূতির কথা প্রকাশ করেছেন।


বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, এই দিনটিতেই তিনি এবং মুগ্ধ একসাথে পৃথিবীতে এসেছিলেন, তাই এই দিনটি তার কাছে জন্ম ও মৃত্যুকে একসঙ্গে দেখার দিন।


স্নিগ্ধর চোখের সামনে সবচেয়ে বেশি যে দৃশ্যটি ভাসে, সেটি হলো- মুগ্ধকে কবরের মাটিতে শুইয়ে দিয়ে প্রথম মাটি ফেলার মুহূর্তটি। তিনি জানান, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ফ্রিজিং ভ্যানে থাকার পরেও যখন মুগ্ধকে দাফন করা হয়, তখন তার মাথা থেকে বের হওয়া রক্তে মুগ্ধর কাফনের কাপড় এবং তার নিজের পাঞ্জাবিও লাল হয়ে গিয়েছিল।

গত এক বছরে তিনি যে দায়িত্বগুলো পালন করেছেন, তা সম্পূর্ণ সততা ও সর্বোচ্চ নিষ্ঠা দিয়ে করার চেষ্টা করেছেন বলে স্নিগ্ধ দাবি করেছেন। তার কাছে প্রতিদিনই মনে হয়, তাদের শহীদ ভাইয়েরা ওপর থেকে তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।

তিনি বিশ্বাস করেন, তারা যে স্বপ্নের বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য তারা কতটা কাজ করেছেন, আল্লাহ সেই হিসাব শহীদদের মাধ্যমেই তাদের থেকে নেবেন। তাই তিনি অন্তত মুগ্ধর কাছে গিয়ে বলতে পারবেন, তিনি তার সাধ্যমতো সততা আর মর্যাদার সঙ্গে কাজ করেছেন।

স্নিগ্ধ জানান, গত এক বছরে অনেক তদবির, প্রস্তাব ও সুযোগ এসেছে, কিন্তু কখনোই এসবের প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ জন্মায়নি। তিনি শান্তি নিয়ে মরতে চান। তিনি লেখেন 'এক টাকা হারাম বা অবৈধভাবে ছুঁয়েও দেখেননি', এবং ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও তা হবে না। এইটুকুই শান্তি তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

ভাই-বোনদের মৃত্যুর পর দেখা হয় না এমন একটি তথ্য তিনি কোথাও দেখেছিলেন বলে উল্লেখ করে স্নিগ্ধ লেখেন, তিনি কখনো এই তথ্যটি যাচাই করার সাহস পাননি। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, আল্লাহ এতটা নিষ্ঠুর হবেন না এবং 'যার সঙ্গে মায়ের পেট ভাগ করেছি, জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ভাগ করেছি,' অন্তত একবার হলেও মৃত্যুর পর তার সঙ্গে মুগ্ধর দেখা করাবেন।

দেখা হলে তিনি মুগ্ধকে বলতে চান, 'তুমি তো একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়ে দিলে, কিন্তু আমি তোমার স্বপ্নের বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, কীভাবে মানুষ তোমার অস্তিত্বকেই বিলীন করে দিতে চেয়েছে।'

স্নিগ্ধ তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, তিনি যতটুকু জানেন, একটি কবরের উপর এক বছর পর আরেকটি কবর দেওয়া যায়। তাই তিনি বলেন, 'স্নিগ্ধ আর মুগ্ধ একজনই; আমরা জন্মেছি একসঙ্গে, আর আল্লাহ নসিবে রাখলে আমার মৃত্যুর পর আমাকেও যেন মুগ্ধর কবরেই শায়িত করা হয়।'

তিনি দেশের সকল 'মুগ্ধদের' শুভ জন্মদিন জানিয়েছেন, যারা মুগ্ধদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার মিশন মনে-প্রাণে ধারণ করে এগিয়ে চলছে।

টিজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img

শহীদ জেহাদ দিবসে তারেক রহমানের বাণী

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জেহাদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা: তারেক রহমান Oct 09, 2025
img
ঘোষণা হলো ‘এক্সট্র্যাকশন ৩’-এর মুক্তির সাল Oct 09, 2025
img
ছেলের সিরিজ নিয়ে বিপাকে শাহরুখ খান Oct 09, 2025
img
সরকারের পারফরম্যান্স আমাকে হতাশ করেছে : বাঁধন Oct 09, 2025
img
বাংলাদেশকে হারিয়েও খুশি নন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ Oct 09, 2025
img
ভিসা নীতিতে ভারতকে কোনো ছাড় দেবে না যুক্তরাজ্য: স্টারমার Oct 09, 2025
img
যতুটুক ঐকমত্য হয়েছে, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে: আমীর খসরু Oct 09, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ Oct 09, 2025
img
মতামত সমন্বয় করে সরকারকে জানাবে ঐকমত্য কমিশন : আলী রীয়াজ Oct 09, 2025
img
জুবিনের চাচাতো ভাই গ্রেপ্তার, মুখ খুললেন গায়কের স্ত্রী Oct 09, 2025
img
ব্যারিস্টার আহসান আটকে শ্বশুরের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ আদালতের Oct 09, 2025
img
নাইজেরিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ আটে আর্জেন্টিনা Oct 09, 2025
img
এখন আর কোনো দল আমাদের হালকাভাবে নেবে না: ফাহিমা Oct 09, 2025
img
রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের ধারণায় নীতিগত ঐকমত্যে এগিয়েছে : জিল্লুর রহমান Oct 09, 2025
img
সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ জনের Oct 09, 2025
img
ম্যারাডোনার ছেঁড়া জার্সি বিক্রির জন্য উঠছে নিলাম মঞ্চে Oct 09, 2025
img
সোমবার গাজায় আটক জিম্মিরা মুক্তি পাবে : ট্রাম্প Oct 09, 2025
img
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা পেলেন দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ Oct 09, 2025
img
‘জাকের ভালো ফর্মে আছে’, ভরসা রাখতে বললেন হৃদয় Oct 09, 2025
img
সুপারিশভিত্তিক পর্যালোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার পরামর্শ Oct 09, 2025