‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই অধ্যাদেশের ফলে ডেটার (উপাত্ত) মালিকানা জনগণের কাছে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন, ব্যক্তি তথ্য উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের মাধ্যমে ডেটা লোকালাইজেশন আমরা উঠিয়ে দিয়েছি। অর্থাৎ যেহেতু বিশ্ব ক্লাউডে যাচ্ছে, সারা বিশ্বের একটা কমন উদ্দেশ্য হচ্ছে “ক্লাউড ফার্স্ট”। মাইক্রোসফট, অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠান ক্লাউডেই সবকিছু প্রসেস করে। সেজন্য আমরা যদি ডেটা লোকালাইজ করি, পটেনশিয়ালি আমাদের বিজনেস ব্লক করে দিচ্ছি। সেজন্য আমরা যৌক্তিক কারণে সেখান থেকে সরে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমাদের ডেটা সুরক্ষা কিংবা সার্বভৌমত্বের কী হবে! এটাকে উদ্দেশ্য করার জন্য আমরা ডেটাকে শ্রেণীকরণ করেছি। শ্রেণীকরণ করে আমরা চার ভাগ করেছি, যেমন- সরকারি উন্মুক্ত ডেটা, বেসরকারি উন্মুক্ত ডেটা, কনফিডেনসিয়াল ডেটা এবং রেস্ট্রিক্টেড ডেটা। আমরা যেটা করেছি উন্মুক্ত দুটি বাদ দিয়ে কনফিডেনসিয়াল ও রেস্ট্রিক্টেড ডেটার ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্মগুলোকে যেকোনো সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার কোম্পানিকে বা যেকোনো ডেটা প্রক্রিয়াজাতকারীকে বাংলাদেশের আদালতের আইনি এখতিয়ারের মধ্যে থাকতে হবে। অর্থাৎ আদালত মেটা বা ফেসবুককে কোনো নির্দেশনা দিলে এখন থেকে তার এটা মানার আইনি বাধ্যবাধকতা আইনের মাধ্যমে রচনা করা হয়েছে।’
শুধু মিডিয়া না, একটা কোম্পানি বাংলাদেশে লাইসেন্স বিক্রি করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে এবং আদালত যদি তাকে কোনো নির্দেশনা দিয়ে থাকে, তাহলে সে আদালতের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। আদালত চাইলে নির্দেশনা অমান্য করলে তাকে শাস্তি দিতে পারবে। তাদের যদি বাংলাদেশে অফিস না থাকে, তাহলে লিয়াজোঁ অফিস কিংবা অন্য কোনো মেকানিজমের মাধ্যমে বাংলাদেশের আদালতের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হবে।’
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা এমন একটা শাসনব্যবস্থায় বাস করেছি, যেখানে মনে করা হতো ডেটার (উপাত্ত) মালিকানা সরকারের কিংবা ডেটার মালিকানা যে মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থা কালেক্ট করে তাদের।
আমরা এই দর্শনকে এই আইনের মাধ্যমে পরিবর্তন করেছি। আমরা নতুন আইনের মাধ্যমে বলার চেষ্টা করেছি যে ডেটার মালিকানা জনগণের। অর্থাৎ ব্যক্তিমালিকানার যে ডেটা সেটার স্বত্ত্বাধিকারী হবে ব্যক্তি। ব্যক্তির সম্মতি সাপেক্ষে ব্যক্তির পক্ষে ডেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিনিময় কিংবা প্রক্রিয়াজাত করতে পারবে। অর্থাৎ এই চারটি কাজে ব্যক্তির সম্মতি বাধ্যতামূলক থাকবে। পাশাপাশি এক প্রতিষ্ঠান আরেক প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে ডেটা দেবে এবং প্রতিষ্ঠান ওই ডেটা দেশের ভেতরে এবং বাইরে কীভাবে ব্যবহার করবে, সেই বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট নির্দেশনা এই আইনের মাধ্যমে চলে এসেছে।’
কেএন/টিকে