অপরাধীদের বিচার ও বাহিনী সংস্কার ছাড়া গণতন্ত্র অসম্ভব : আখতার

জনগণের বিরুদ্ধে যারা অস্ত্র ধরেছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন চরমে পৌঁছেছিল। গুম, খুন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এসব অপরাধের জড়িতদের বিচার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কার ছাড়া গণতন্ত্র ফেরানো সম্ভব নয়।

শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর নগরীর পাকের মোড় এলাকায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করেনি জাতীয় নাগরিক পার্টি। তবে বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় সময়ের প্রয়োজনে ভবিষ্যতে জোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো দলের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনায় বসিনি।

বাংলাদেশের প্রয়োজনে যদি কখনো জোটের দরকার হয়, সময়ই তা বলে দেবে। এনসিপি সব সময় জনগণের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়, কোনো ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থে নয়।’

এ সময় তিনি ঐকমত্য কমিশনে প্রস্তাবিত ‘জুলাই সনদ’-এর আইনগত ভিত্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান। একইসঙ্গে তিনি জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন।

আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে যে ঐকমত্যের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, সেটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এনসিপি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং আমরা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকব।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন চরমে পৌঁছেছিল। গুম, খুন, এবং কথিত ‘আয়নাঘর’-এর মতো ঘটনাগুলো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এসব অপরাধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা না থাকলে শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট শাসক হতে পারতেন না।

র‌্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যে সদস্যরা জুলাই আন্দোলনে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে জনগণের আস্থা ফিরবে না।”

আখতার হোসেন অভিযোগ করেন, ‘গত এক যুগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের কারণে তাদের জবাবদিহি ও পেশাদারি হারিয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যদি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতো, তাহলে গুম-খুনের মতো ঘটনা ঘটত না। তাই শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও সময়ের দাবি।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় জনগণের প্রত্যাশা এখন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনর্গঠন। সেই লক্ষ্যে এনসিপি রাজনৈতিক সমঝোতা ও জনঅংশগ্রহণের ওপর জোর দিচ্ছে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা কাউকে শত্রু মনে করি না। যে যেখানেই থাকুক জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এক হতে হবে। বাংলাদেশ আজ ঐক্যের রাজনীতি চায়, বিভাজনের নয়।’

শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এনসিপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল নামিবিয়া Oct 12, 2025
img
চট্টগ্রামে কনসার্টে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের জেরে সংঘর্ষ Oct 12, 2025
img
অধিকাংশ সেনা সদস্য চান সীমা লঙ্ঘনকারীরা বিচারের মুখোমুখি হোক : বিএনপি Oct 12, 2025
img
আরিয়ানের বিরুদ্ধে মামলা করায় বিপাকে সমীর ওয়াংখেড়ে Oct 12, 2025
img
আফগানদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক সিরিজ হার বাংলাদেশের Oct 12, 2025
img
বিমানবন্দর সড়কে নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম! Oct 11, 2025
img
বিএনপি সরকারে এলে জিডিপির ৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করবে : শামা ওবায়েদ Oct 11, 2025
img
জুলাই অভ্যুত্থানের পর সাংবাদিকদের অবারিত স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে: আজাদ মজুমদার Oct 11, 2025
img

সামান্তা শারমিন

শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যাগুলোকে আইডেন্টিফাই করতে হবে Oct 11, 2025
img
রোববার থেকে দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু Oct 11, 2025
img
মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ইরানের Oct 11, 2025
img
জামায়াত সৎ মানুষদের মনোনয়ন দিয়েছে : এটিএম আজহার Oct 11, 2025
img

জিল্লুর রহমানের বিশ্লেষণ

আবারও ভেল্কিবাজি, রাজনীতিতে কালো ছায়া Oct 11, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিলো চীন Oct 11, 2025
img
গাজায় চালু হচ্ছে ব্যাংকিং কার্যক্রম Oct 11, 2025
অনুশীলনের মাঝেই ৬ কোটি টাকার ক্ষতি রোহিতের Oct 11, 2025
ব্যারিস্টার নুসরাতের হাতে আংটি পরালেন ইশরাক Oct 11, 2025
কি কারণে রাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী? Oct 11, 2025
নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হলে ভিন্নমত বিশেষজ্ঞদের! Oct 11, 2025
চাকরি হারিয়ে যা বলছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা! Oct 11, 2025