যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তার মিত্র হাভিয়ের মিলেই যদি চলতি মাসের গুরুত্বপূর্ণ আইনসভা নির্বাচনে পরাজিত হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আর্জেন্টিনাকে আর আর্থিক সহায়তা দেবে না।
তিনি বলেন, “যদি তিনি হারেন, তাহলে আমরা আর্জেন্টিনার প্রতি উদার থাকব না।”
ট্রাম্প বলেন, “আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট মিলেই হোয়াইট হাউসে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন চাইতে এসেছিলেন। আমি এই লোকটির সঙ্গে আছি, কারণ তার দর্শন সঠিক। সে জিততেও পারে, না-ও জিততে পারে। আমি মনে করি সে জিতবে। আর যদি সে জিতে, আমরা তার পাশে থাকব; না জিতলে, আমরা চলে যাব।”
ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই আর্জেন্টিনার টালমাটাল অর্থনীতি সামাল দিতে ২০ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে এই সমর্থন বাজারকে স্থির করতে পারেনি এবং ২৬ অক্টোবরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে মিলেইয়ের জনপ্রিয়তা বাড়তেও দেখা যায়নি।
এই নির্বাচনে মিলেইয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই এমন দল সংসদে আসন বাড়াতে চায়, যাতে সে কঠোর ব্যয়-সংকোচনমূলক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারে, না হলে পরবর্তী দুই বছর আইনসভায় বাধার মুখে পড়বে।
ট্রাম্প মিলেইকে অসাধারণ নেতা বলে অভিহিত করে বলেন, তিনি সম্পূর্ণরূপে তার আদর্শিক মিত্রকে সমর্থন করছেন।
টাম্প বলেন, মিলেই ‘মেক আর্জেন্টিনা গ্রেট এগেইন’ স্লোগানে বিশ্বাসী; যা ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ স্লোগানের সঙ্গে মিলে যায়।
তবে ট্রাম্পের এই বিপুল আর্থিক সহায়তা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাংবাদিকরা যখন জিজ্ঞাসা করেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র কী লাভ করছে, ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি চমৎকার দর্শনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করছি। আমরা চাই তারা সফল হোক।”
আর্জেন্টিনা বর্তমানে আরেকটি গভীর আর্থিক সংকট মোকাবিলা করছে এবং মিলেইয়ের প্রতি অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থায় তিনি তার ডানপন্থী মিত্র ট্রাম্পের কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছেন।
ট্রাম্প বারবার মিলেইয়ের রাজনৈতিক সমর্থনে কথা বলেছেন এবং বিশাল অর্থনৈতিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু তবুও আর্জেন্টিনার প্রতি বাজারে আস্থা ফিরেনি। সম্প্রতি দেশটি পেসো রক্ষা করতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করেছে, যা অর্থনীতিবিদদের মতে অটেকসই নয়।
এ পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনে মিলেইয়ের মিত্ররা হস্তক্ষেপ করে, আর মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, “আর্জেন্টিনা বর্তমানে তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে,” এবং তিনি ২০ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
এই ঘোষণার পর আর্জেন্টিনার বন্ড ও শেয়ারবাজারে কিছুটা উন্নতি দেখা যায় এবং পেসোর ওপর চাপও কিছুটা কমে। এটি লাতিন আমেরিকার মুদ্রাবাজারে যুক্তরাষ্ট্রের বিরল সরাসরি হস্তক্ষেপ, যা ওয়াশিংটনের মিলেইয়ের সাফল্যে কৌশলগত আগ্রহ প্রকাশ করে।
এদিকে আর্জেন্টিনায় গুজব চলছে, ট্রাম্প তার সমর্থনের বিনিময়ে মিলেইয়ের কাছ থেকে কী চাইছেন। মিলেই ক্ষমতায় আসার আগে আর্জেন্টিনা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাড়াচ্ছিল।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ইএ/এসএন