প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদিকে স্মরণ করলেন অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। এক দীর্ঘ আড্ডার স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ফরীদি ছিলেন এমন এক শিল্পী, যিনি বিশ্বাস করতেন একজন অভিনেতার শক্তিই চলচ্চিত্রের ধরণ, গল্প ও নির্মাণকে বদলে দিতে পারে।
সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি নিজে একসময় সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়েছিলাম। তখনকার প্রস্তাব ছিল দুর্দান্ত। নায়িকা ববিতা, দ্বিতীয় অধ্যায়ে সুবর্ণা মোস্তফা, প্রযোজকও দেশের সবচেয়ে সফলদের একজন, পরিচালকও নামকরা। মনে হয়েছিল, এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব আর হতে পারে না। কিন্তু অভিনয় করতে গিয়ে বুঝলাম, গল্পের ধারা আগের প্রজন্মের মতোই রাজ্জাক, কবরি, সাবানাদের সময়ের মতো। আমি ভাবলাম, এই অভিনয়ে নতুন কিছু যোগ করতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, “আমার তখন মনে হয়েছিল যে আমি তো আর বদলাতে পারবো না। একটা সংলাপ ছিল ‘আমি একজন ব্যর্থ প্রেমিক, জীবনের সুখ-শান্তি হারিয়ে ফেলেছি।’ আমি জানতাম, আমি এটা বললে দর্শক হাসবে। সত্যিই হলে গিয়ে দেখলাম, মানুষ হাসছে। তখন সিদ্ধান্ত নিই; সিনেমা আমার জন্য নয়।”
এরপরই আফজাল হোসেন হুমায়ূন ফরীদির প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, ‘বহু বছর পর ফরীদি সিদ্ধান্ত নেয়, সে দেশে সিনেমা করবে। আমরা তিনজন ফরীদি, সুবর্ণা, আমি এক বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বসেছিলাম দীর্ঘ আড্ডায়। আমি বললাম কেন আমি সিনেমা ছাড়লাম, ফরীদি বলল কেন সে করতে চায়। সুবর্ণা তখনও দ্বিধায় ছিল। শেষ পর্যন্ত সে (সুবর্ণা) কিছু ছবি করল, তারপর সিদ্ধান্ত নিল করবে না।’
ফরীদির ভাবনা নিয়ে আফজাল বলেন, ‘ফরীদি বলেছিল, একজন শিল্পীর ক্ষমতা দিয়েই চলচ্চিত্র বদলে যেতে পারে। আমি তখন চুপ ছিলাম, ভেবেছিলাম ওর স্বপ্নটা থাকুক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখলাম, ওকেও এমন সব চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছে, যা শুধু জনপ্রিয়তা আনে, কিন্তু শিল্পীর আসল সত্তাকে বাঁচিয়ে রাখে না।’
আফজাল হোসেনের ভাষায়, ‘ফরীদি চেষ্টা করেছিল শিল্পীর মর্যাদা টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু আমাদের চারপাশে সেই পরিবেশ তাকে সেই জায়গা দেয়নি।’
এমকে/এসএন