মরক্কোয় জেন-জি বিক্ষোভে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীকে কারাদণ্ড

মরক্কোতে জেন-জি তরুণদের নেতৃত্বে চলা সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার এক শিক্ষার্থীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তার আইনজীবী শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

এই রায়কে মরক্কোয় জেন-জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত প্রথম প্রকাশ্য কারাদণ্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে শুরু হয়ে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই এই আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আইনজীবী মোহাম্মেদ নুইনি জানান, ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘অননুমোদিত ও নিরস্ত্র সমাবেশে অংশগ্রহণ’ এবং ‘বিচার বিভাগীয় পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপমান’ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘এই রায় অন্যায্য, আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করব।’ তিনি যুক্তি দেন, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায়ে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘটের জন্য আলাদা অনুমতির প্রয়োজন হয় না।
নুইনির মতে, তার মক্কেলকে আন্দোলন শুরু হওয়ার তিন দিন পর ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদমাধ্যম হেসপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আরেক আইনজীবীর বরাতে জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থীর গ্রেপ্তার ছিল ‘দুর্ভাগ্যজনক এক কাকতালীয় ঘটনা’, কারণ তিনি সেদিন কাসাব্লাঙ্কায় পারিবারিক সফরে গিয়েছিলেন।

মোহাম্মেদ লাক্ষদার নামের ওই আইনজীবী আদালতে বলেন, শিক্ষার্থীটি ‘পুলিশকে অপমান করেননি’ বা ‘মিথ্যা তথ্য দেননি’; বরং তিনি শুধু জানিয়েছিলেন, ‘আমি একজন শিক্ষার্থী।’

মূলত শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভের প্রথম দিকেই শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিছু শহরে সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

কর্তৃপক্ষের দাবি, আগাদিরের কাছে এক গ্রামে সংঘর্ষের সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হন।

মরক্কোর মানবাধিকার সংস্থা এএমডিএইচ জানিয়েছে, প্রায় ৫৫০ জনকে আন্দোলনে অংশগ্রহণের অভিযোগে বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই এখনও আটক রয়েছেন।

দেশজুড়ে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে অনলাইনভিত্তিক তরুণ সংগঠন ‘জেনজি ২১২’, যদিও তাদের সদস্যদের পরিচয় এখনো অজানা।

সংগঠনটি শনিবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে এবং বিক্ষোভে গ্রেপ্তারদের মুক্তি দাবি করেছে।

এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় আগাদিরের এক হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় আট গর্ভবতী নারীর মৃত্যুর ঘটনায়।

তবে পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীরা শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ও সরকার পরিবর্তনের দাবিও তুলেছেন।

টিজে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চট্টগ্রামে পৌঁছেছে ওমানে নিহত ৮ প্রবাসীর লাশ Oct 19, 2025
img
এর চেয়ে বাজে উইকেট গায়ানাতে ছিল: রিশাদ Oct 19, 2025
img
হলুদ শাড়িতে নজর কাড়লেন জয়া আহসান! Oct 19, 2025
img
জুলাই সনদ ঘিরে গণভোট রাষ্ট্রকে এক ব্যতিক্রমী সমীকরণে বসিয়েছে: জিল্লুর রহমান Oct 19, 2025
img
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসলামাবাদ-কাবুল Oct 19, 2025
img
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত Oct 19, 2025
img
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার Oct 19, 2025
img
সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে পাওলি দাম! Oct 19, 2025
img
প্রতীক পছন্দের শেষ দিন আজ, নিজ অবস্থানে অনড় এনসিপি! Oct 19, 2025
img
রশিদ-নবীদের জায়গায় অন্য দেশের নাম চূড়ান্ত করল পিসিবি Oct 19, 2025
img
সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান Oct 19, 2025
img
৩ ক্রিকেটারের মৃত্যুতে আইসিসির মন্তব্যে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান Oct 19, 2025
img
মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্তের আগে কনডেম সেলে নয় : আপিল শুনানি ২৮ অক্টোবর Oct 19, 2025
img
মেসির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে বিধ্বস্ত ন্যাশভিলে Oct 19, 2025
img
নির্বাচিত সরকারকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে : কর্নেল অলি Oct 19, 2025
img
গাজায় নারীসহ প্রাণ হারান আরো ১১ জন Oct 19, 2025
img
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি Oct 19, 2025
img
ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান Oct 19, 2025
img
অননুমোদিত হর্ন অপসারণের নির্দেশ বিআরটিএ'র Oct 19, 2025
img
রোহিতের ৫০০তম ম্যাচ ঘিরে এক অনন্য বিশ্বরেকর্ডের হাতছানি Oct 19, 2025