আওয়ামী লীগ বিএনপি জামায়াত সবাইকেই নিজ নিজ কৃতকর্মের দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। শনিবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা বাজারে বেশ চালু করা হয়েছে- ‘আমরা তো আগে আওয়ামী লীগ দেখছি বিএনপিও দেখছি। এইবার জামায়াতকে দেখি।’ এই কথায় তথ্যগত ভুল আছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা ‘জামায়াতকে দেখি নাই’ কথাটা ঠিক না, একটু খেয়াল করলেই মনে পড়বে, আসলে ভালোভাবেই দেখেছি তাদের। ১৯৭১ সাল তার সবচাইতে বড় দৃষ্টান্ত। পাকিস্তান সামরিক বাহিনী এই দেশে যখন ভয়ংকর নৃশংস গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালাচ্ছে, তখন তার প্রধান সহযোগী হিসেবে জামায়াত ও তার সব সংগঠনই ক্ষমতা উপভোগ করেছে। অসম্ভব মাত্রায় মানুষের ওপর ভয়ংকর জুলুমে তারা দানবীয় ভূমিকা নিয়েছে। সেজন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের দায় তাদেরও নিতে হবে।’’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘৮০ দশকে প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াতের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্ত হয়। সেসময় হল দখল, সন্ত্রাসের বহু ঘটনাতেও তাদের ভূমিকা আছে। রতন, কবিরসহ নিহত, রগকাটাসহ হতাহতের বহু ঘটনা তার দৃষ্টান্ত।
এর পর ১৯৯১ সালে বিএনপির আসন ঘাটতির কারণে তাদের সমর্থন দিয়ে ক্ষমতার সহযোগী হয় তারা। যুদ্ধাপরাধের কারণে নাগরিকত্ব হারানো গোলাম আজম জামায়াতের আমির হিসাবে তখনই আত্মপ্রকাশ করেন।’
‘১৯৯৫-৯৬ সালে জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। ২০০১ সালে আবার বিএনপির সাথে জামায়াত ক্ষমতায় যায়, দুটো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় তখন ছিল তাদের হাতে। তাদের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় র্যাব গঠন হয়, আদমজী পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়, বাংলা ভাইসহ সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটে, বিচার বহির্ভূত রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড ব্যাপকভাবে শুরু হয় এই সময়...।
আওয়ামী লীগ বিএনপি সবারই নিজ নিজ কৃতকর্মের দায় নিতে হবে। জামায়াতকেও তাই।’
ইএ/টিকে