ইউক্রেন যদি সত্যিই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি চায়, তাহলে তার ভূখণ্ডের কিছু অংশ রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার মার্কিন সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক মারিয়া বার্টিরোমোকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে বার্টিরোমো তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ইউক্রেন তার ভূখণ্ডের দখলে কোনো প্রকার ছাড় না দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যেতে পারে কি না।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “সম্ভবত নয়। ইউক্রেনকে তার ভূখণ্ডের কিছু অংশের দখল ছেড়ে দিতে হবে। এই ত্যাগস্বীকার তাকে করতেই হবে। কারণ, পুতিন (রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) অবশ্যই কিছু নেবেন। মানে আমি বলতে চাচ্ছি, তারা (রুশ বাহিনী) লড়াই করেছে এবং অবশ্যই কিছু সম্পত্তি তারা জয় করেছে।”
প্রসঙ্গত, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে সবচেয়ে বড় বাধা ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়টি। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে হটিয়ে কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া। পরের বছর গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বছরের পর বছর ধরে গড়িমসি করায় ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া, যা এখনও চলছে। সেই অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন প্রদেশ দখল করে রুশ বাহিনী। এই চার প্রদেশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের ১০ শতাংশ।
মস্কো জানিয়েছে, কিয়েভ যদি ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসনকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি থাকে, তাহলে যুদ্ধ থামাতে পদক্ষেপ নেবে রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি কোনোভাবেই ক্রিমিয়া এবং সঙ্গে চার প্রদেশের দখল রাশিয়াকে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে লাখ লাখ ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। গত শুক্রবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলেনস্কি। সেই বৈঠকে রুশ বাহিনীকে ঠেকানোর জন্য সম্প্রতি ট্রাম্পের কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছেন তিনি।
তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এখনও এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসেননি তিনি। রোববার ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, “আপনি জানেন, আমরা আমাদের সব অস্ত্র ইউক্রেনকে দিতে পারি না, একেবারেই পারি না। যদিও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউক্রেনের সঙ্গে আমার খুবই চমৎকার সম্পর্ক, তবুও নয়। আমি আমাদের নিজেদের অস্ত্রাগার খালি করে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারব না। কারণ আমি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ফেলতে পারি না।”
সূত্র : আরটি
এমকে/এসএন