এবার এইচএসসিতে পাসের হার কম হওয়ায় সব শিক্ষার্থী স্নাতকে ভর্তি হলেও উচ্চশিক্ষায় ফাঁকা থাকবে প্রায় ১১ লাখ আসন। ফলে শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। যাচাই-বাছাই ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং পরিকল্পনা ছাড়াই আসন বাড়ানোর ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাসের পরামর্শ শিক্ষাবিদদের। আর ইউজিসি বলছে, এর ফলে মানহীন ও পিছিয়ে পড়া প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী পেতে নিজেদের অবস্থার উন্নয়নে সচেষ্ট হবে।
এবার এইচএসসিতে পাসের হার কম হওয়ায় সব শিক্ষার্থী স্নাতকে ভর্তি হলেও উচ্চশিক্ষায় ফাঁকা থাকবে প্রায় ১১ লাখ আসন।
চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার প্রায় ২০ শতাংশ কম। ১১টি বোর্ড মিলে এবার মোট পাস করেছে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন।
দেশে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ে মোট আসন ১৮ লাখ ৭ হাজার। তাই, এবার পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও আসন ফাঁকা থাকবে ১০ লাখ ৮০ হাজার। ফলে শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেশ কিছু কলেজ ও পিছিয়ে পড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
এক শিক্ষাবিদ বলেন, দেশের চাহিদার কথা মাথায় না রেখে যাচাই-বাছাই ছাড়াই যততত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে উচ্চশিক্ষায় বেড়েছে আসন। তাই আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাসের পাশাপাশি সবাইকে প্রচলিত উচ্চশিক্ষা গ্রহণ না করে কর্মমুখী শিক্ষাগ্রহণের পরামর্শ তাদের।
অধ্যাপক মজিবুর রহমান দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, উচ্চ শিক্ষায় কেবলি আগ্রহী এবং যার সক্ষমতা ও যোগ্যতা আছে তাদের জন্য। উচ্চ শিক্ষা সবার জন্য না । এইচএসসি পর্যন্ত ঠিক আছে। এরপর সবাইকে আপনার স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করাতে হবে, বিষয়টা কিন্তু না। কেউ হয়ত কর্মমুখী পড়ায় যাবে, কেউ ব্যবসায়ী হবে আবার কেউ অন্যান্য কাজে যাবে।
কেউ টেকনিক্যালে যাবে, কেউ স্বাধীন পেশায় যাবে এটা হতেই পারে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, মানহীন অনেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর সংকটে পড়লেও পিছিয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী পেতে মানোন্নয়নে সচেষ্ট হবে।
আর শিক্ষার্থী কম পাস করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থানে আসবে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড.এস এম এ ফয়েজ।
উচ্চশিক্ষায় সংখ্যা নয় বরং মানসম্মত শিক্ষা ও শিল্পের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মানবসম্পদ তৈরি করতে পারাই বড় চ্যালেঞ্জ বলছে ইউজিসি।
এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরীক্ষা দেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী। চলতি বছরের এইচএসসি–সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ২৬ জুন। লিখিত পরীক্ষা গত ১৯ আগস্ট শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২১ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। ফলাফল ঘোষণা করা হয় ফলাফল ১৬ অক্টোবর।
এমকে/এসএন