ঢাকাই সিনেমার অমর নায়ক সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেওয়ায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে তার মৃত্যুরহস্য। বের হয়ে আসছে একের পর এক ঘটনা, নায়কের অকালপ্রয়াণ ঘিরে তৈরি হচ্ছে নানা জল্পনা।
সালমান শাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক এবং এই মামলার অন্যতম আসামি (৪ নম্বর) খল অভিনেতা আশরাফুল হক ডন।
সম্প্রতি সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তরা যাতে কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে না পারেন, সে লক্ষ্যে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এর মধ্যে সোশ্যালে ভাইরাল হয়েছে চার বছর আগে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের জনপ্রিয় শো ‘সেন্স অব হিউমার’-এ ডনের দেওয়া এক সাক্ষাৎকার।
সাক্ষাৎকারে শাহরিয়ার নাজিম জয় ডনকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘সালমান ভাইয়ের (সালমান শাহ) আত্মহত্যার কারণ কে হতে পারে? উনার মা না উনার স্ত্রী? আপনি কী বলবেন? এককথায় বললে।’
এর উত্তরে ডন এটিকে ‘ফ্যামিলিগত ব্যাপার’ হিসেবে উল্লেখ করে সালমানের ‘মেন্টালি আপসেট’ থাকার প্রসঙ্গ তোলেন।
এদিকে সালমান মারা যাওয়ার পরে এক জবানবন্দিতে সেই হত্যা মামলার আসামি রেজভী আহমেদ ফরহাদ জানিয়েছিলেন, এটি হত্যাকাণ্ড। তারা কয়েকজন মিলে সালমান শাহকে হত্যা করেন এবং এর সঙ্গে সামিরা, ডনও জড়িত ছিল।
অথচ জয়ের সাক্ষাৎকারে ডন বলেন, ‘সেদিন ছিল শুক্রবার। আমি বগুড়াতে ছিলাম।
সেখানে গেলে আমি এলাকার ছোট ভাই, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিই। আমার বাসার পাশেই হচ্ছে নদী। ওই দিন সকালে নদীতে নৌকার মধ্যে ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে নৌকায় খিচুড়ি পাকিয়ে খাচ্ছিলাম। ছোট্ট নদী তো, নদীর ওপারে একটা গ্রাম আছে। আমার এক বন্ধু বলল, দোস্ত! ওই গ্রামে আমার এক স্কুল ফ্রেন্ড আছে, ও আসবে ঘাটে নৌকা ভিড়া।
ঘাটে নৌকা ভিড়াতেই দেখি হাজার হাজার লোক। তারা বলতেছে, ডন ভাই আপনি এখানে! সালমান শাহ তো মারা গেছে। তখন আমি বললাম, কী বলো! তখন আমি মনে করেছি, সালমান মনে হয় গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে।
কারণ, সালমান খুব ভালো ড্রাইভ করতে জানত, অনেক এক্সপার্ট। ও এমনভাবে গাড়ি চালাত, আমি ওর গাড়িতে উঠার সময় সুরা পড়ে উঠতাম।’
এরপর তিনি বলেন, ‘এরপর নৌকা ঘাটে ভিড়িয়ে বাড়ি এসে সম্ভবত সন্ধ্যা ৭টার খবরে টেলিভিশনে দেখলাম সালমান মারা গেছে। কিন্তু কী কারণে মারা গেছে, ওইটা তো বুঝতে হবে। তখন আমি মনে মনে ভাবলাম, বাসায় মারা গেছে তার মানে হয়তো কোনো একটা সমস্যা হয়েছে।’
১৯৯৬ সালের ৬ ডিসেম্বর মারা যান সালমান শাহ। সেই হত্যা মামলায় সামিরা ও ডন ছাড়া অন্য ৯ জন আসামি হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভী আহমেদ ফরহাদ।
আইকে/টিএ