মানবতার প্রতি বৈশ্বিক উদাসীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউনেসকো সাধারণ সম্মেলনের নবনির্বাচিত সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের দুর্ভোগ, সংঘাত, অনাহার, যুদ্ধ, গণহত্যার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েছি।’
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাপানকে পরাজিত করে রাষ্ট্রদূত তালহা ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো কূটনীতিক সংস্থাটির এই মর্যাদাপূর্ণ পদে আসীন হলেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিজের প্রথম বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত তালহা বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা, প্রযুক্তিগত ঝুঁকি এবং নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে এখন সমাজে বিভক্তি সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, আর বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এমন এক ঝুঁকি তৈরি করছে, যা পুরো মানবজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।’
তিনি মনে করেন, ইউনেসকোর মূল দর্শন শান্তি ও মানবতার সংস্কৃতি প্রচার ৮০ বছর পরেও প্রাসঙ্গিক। তবে ২০২৫ সালের বিশ্ব নতুন ও জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যেখানে ইউনেসকো পরিবর্তনের শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।
ইউনেসকোর মহাপরিচালক ওদ্রে আজুলে রাষ্ট্রদূত তালহাকে নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
এ ছাড়া সাধারণ সম্মেলনের সাবেক সভাপতি রাষ্ট্রদূত সিমোনা তার ভাষণে বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত তালহার পেশাগত অভিজ্ঞতা থেকে ইউনেসকো ও বৈশ্বিক সম্প্রদায় উপকৃত হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিওয়েভ, সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচ এবং স্লোভাকিয়ার প্রেসিডেন্ট পিটার পেল্লেগ্রিনি। ৪০ বছর পর এবার ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনটি সংস্থার সদর দপ্তরের বাইরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা ভূরাজনৈতিক ও আঞ্চলিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আইকে/এসএন