ঘরের মাঠও যেন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে জাকের আলী অনিকের জন্য। জাতীয় দলে এসেই অটোচয়েজে পরিণত হওয়া জাকের পেয়েছেন অধিনায়কত্বের স্বাদও। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি বদলে গেছে। ব্যাট হাতে জাকের মাঠে নামলেও খোদ টাইগার সমর্থকরাই তাকে দুয়ো দিচ্ছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার ম্যাচেও গ্যালারি থেকে তাকে লক্ষ্য করে ভেসে এসেছে একের পর এক বাজে মন্তব্য।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে মাঠে নামার সুযোগ পাননি জাকের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে লিটন দাসের অনুপস্থিতে অধিনায়কত্ব করলেও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে একাদশে জায়গা হয়নি তার। তবে, পরের দুই ম্যাচে সুযোগ পেলেও করেছেন ১৮ বলে ১৭ ও ৩ বলে ৫। জাকেরের ব্যাটে অবশ্য রান নেই বেশ কিছুদিন থেকেই। শেষ ৮ ইনিংসের পাঁচটিতেই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি এই ডানহাতি।
রান করতে না পারার চেয়েও জাকের বেশি সমালোচিত হচ্ছেন তার খেলার ধরণের জন্য। তার ব্যাটিং অভিধানে অফসাইড বলে কোনোকিছুর অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেন সমালোচকরা। প্রায় সব বলই লেগ সাইডে খেলার চেষ্টা করেন তিনি। এই দৃষ্টিকটু ব্যাটিংয়ের জন্যই বেশি সমালোচিত হচ্ছেন জাকের।
ছক্কা মারার জন্য খ্যাতি পেলেও এশিয়া কাপের মঞ্চে একটাও ছক্কা মারতে পারেননি এই হার্ডহিটার। সবশেষ ১২ ম্যাচেই মেরেছেন মাত্র ৩টি ছক্কা। সময় যে জাকেরের অনুকূলে নেই সেটা বলাই যায়। গতকাল (৩১ অক্টোবর) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লিটন দাস এই ক্রিকেটারের অফফর্ম নিয়ে বলেন, ‘এখান থেকে ফিরে আসতে হলে সাহস রাখতে হবে, খুব একটা চিন্তিত হওয়া যাবে না। কারণ, নেতিবাচক চিন্তাটাই বেশি আসবে, ইতিবাচক আসবে না। যদি সে ইতিবাচক চিন্তা করতে পারে, তাহলে তার জন্য খুবই ভালো।’
ক্যারিয়ারে এমন খারাপ সময় লিটনেরও গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। লিটন সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘একজন যখন স্ট্রাগল করে, তখন নিজেকে ব্যাক করা, নিজেকে সময় দেওয়া এবং যেসব মানুষ তাঁকে সাহায্য করে সব সময় তাদের সাথে ওঠাবসা করা (দরকার হয়)। আমার মনে হয় জাকের শিগগিরই ফিরবে এবং তা ভালো মতোই।’
জাকেরের শটের সীমাবদ্ধতা এখন সবারই জানা। ভালো করতে শটের বৈচিত্র বাড়ানোরও পরামর্শ দিচ্ছেন লিটন। টাইগার দলপতি বলেন, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের স্কিল বাড়াতে হবে, সব ধরনের শট খেলতে হবে। আমরা অল্প কয়েকজন ব্যাটসম্যান রিভার্স সুইপ খেলি, সেটাও একটা পয়েন্টে গিয়ে। বিশ্ব ক্রিকেট কিন্তু এখন অনেক এগিয়ে গেছে। এই ঘূর্ণি উইকেটে যারা ব্যাটিং করে, তারা রিভার্স সুইপ মারে। সেই দিক দিয়েও আমরা একটু পিছিয়ে আছি। ওই জিনিসগুলো নিয়েও কাজ করতে হবে। আপনি যত পারেন আপনার শক্তি বাড়াবেন। কিন্তু কখন তা প্রয়োগ করবেন, সেটা আপনার খেলার ওপর নির্ভর করবে।’
এসএস/টিএ