চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিবেশী দেশের থিংকট্যাংকে চিন্তার কারণ ঘটাচ্ছে। মাস দেড়েক আগে চীনের অত্যাধুনিক জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনার খবর সামনে এসেছিল। এর সঙ্গে পাকিস্তান, তুরস্ক ও ইতালির কাছ থেকেও যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে ঢাকা।
এরই মধ্যে নতুন খবর, এবার চীনের কাছ থেকে ভয়ংকর এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আধুনিক ও শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে।
ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়াকে উদ্ধৃত করে রোববার (২ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য উইকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ তার প্রতিরক্ষা খাতের জন্য যত আমদানি করেছে, তার ৭০ শতাংশেরও বেশি এসেছে বেইজিং থেকে। চীনের কাছ থেকে জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তির খবরের কিছুদিন পরই এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা গ্রহণের খবরটি সামনে এলো।
উৎপত্তি ও ব্যবহার: চীনে স্থানীয়ভাবে ডিএফ-১২এ নামে পরিচিত এসওয়াই-৪০০ সর্বপ্রথম ২০০৮ সালে ঝুহাই এয়ারশোতে প্রকাশ্যে এসেছিল। বর্তমানে কাতার এবং মিয়ানমার এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করছে।
পাল্লা: এর আধুনিক ভার্সনগুলোর পাল্লা প্রায় ২৮০ কিলোমিটার।
গঠন: এর স্ট্যান্ডার্ড কনফিগারেশনে কঠিন জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্রসহ আটটি ক্যানিস্টার রয়েছে। প্রজেক্টাইলগুলো কারখানায় এই পাত্রে লাগানো হয় এবং অতিরিক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই দীর্ঘ বছর সংরক্ষণ করা যায়।
ওজন ও ওয়ারহেড: প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ছয় মিটার লম্বা এবং ০.৪ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট। ওয়ারহেড কনফিগারেশনের ওপর নির্ভর করে এগুলো ৯০০ থেকে ১,৩০০ কেজি পর্যন্ত ভারী হতে পারে। ওয়ারহেড বিকল্পগুলির মধ্যে উচ্চ-বিস্ফোরক ফ্র্যাগমেন্টেশন, সাবমিনিশন ডিসপেন্সার এবং ক্লাস্টার পেলোড রয়েছে।
প্রযুক্তি: এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাগুলোতে সক্রিয় রাডার বা প্যাসিভ রাডার বা আইআইআর সিকার রয়েছে, যার টার্মিনাল পর্যায়ে লক্ষ্য-শনাক্তকরণ ক্ষমতা রয়েছে।
গতি ও গাইডেন্স: অসমর্থিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ম্যাক ৫.৫ পর্যন্ত গতিতে পৌঁছাতে পারে এবং একটি হাইব্রিড গাইডেন্স স্যুট দিয়ে সজ্জিত, যা ইনর্শিয়াল নেভিগেশন এবং স্যাটেলাইট অগমেন্টেশন বা জিপিএস সিস্টেমের সমন্বয় করে।
মোতায়েন: প্রতিটি এসওয়াই-৪০০ মাত্র ১০ মিনিটেরও কম সময়ে লঞ্চের জন্য প্রস্তুত হতে পারে এবং দ্রুত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা ছোট রকেট দিয়ে পুনরায় লোড করা যায়।
আইকে/ টিএ