চোখের শুষ্কতা ও প্রতিকার

চোখ শুকিয়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা শীতকালে বহু লোকের হয়ে থাকে। এটি প্রায়শই বাইরের বাতাসের পরিস্থিতি এবং বাড়ির অভ্যন্তরে হিটারের ব্যবহারের ফলে হয়।

তাপমাত্রা হ্রাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাস শীতল ও শুষ্ক হয়ে যায়। বাষ্পীভবনের কারণে ত্বকের মতো চোখও শুষ্ক হয়ে যায়। ফলস্বরূপ চোখে চুলকানি ও জ্বলুনি অনুভূত হয়, কখনও কখনও চোখ লাল হয়ে যায়। একইসঙ্গে কেউ কেউ জলীয় দৃষ্টিও অনুভব করতে পারেন।

দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেখে দিলে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। এমনকি চোখের কর্নিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

দুর্বল বায়ু চলাচলের ফলেও চোখ শুষ্ক হতে পারে, এর ফলে সংক্রমণের মাত্রাও বাড়তে পারে। লক্ষণ যাই হোক না কেন, শুষ্ক চোখ শীতের মৌসুমে আপনার অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

কীভাবে নিজের চোখ সুরক্ষিত রাখা যায়, এনিয়ে ভারতের ম্যাক্সিভিশন সুপার স্পেশালিটি আই হাসপাতালের পরামর্শদাতা চক্ষু ও গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রাধার্না কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

চলুন জেনে নিই, কীভাবে নিজের চোখ সুরক্ষিত রাখা যাবে-

  • শরীরের পাশাপাশি চোখকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর তরল পদার্থ ও পানি পান করুন।
  • চোখকে আর্দ্র রাখার জন্য চোখ ঘষা এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে দিনে কয়েকবার চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে চোখ শুষ্কতার সমস্যায় ভুগতে থাকেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

  • ঘরের অভ্যন্তরীণ বাতাসে কিছু আর্দ্রতা যোগ করতে ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
  • আগুনের মতো সরাসরি তাপ থেকে দূরে থাকুন। কারণ, এটি বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়, চোখ ও ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে।
  • ডিজিটাল ডিভাইস, যেমন- ল্যাপটপ, স্মার্টফোন প্রভৃতি থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে চেষ্টা করুন। কারণ, ডিজিটাল ডিভাইসের ডিসপ্লে থেকে বেরোনো রেডিয়েশন চোখকে আরও শুষ্ক করে তোলে।
  • ভিটামিন-এ ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। শস্যবীজ, চিয়াবীজ, সলোমন প্রভৃতি মাইবোমিয়ান গ্রন্থির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এবং এইভাবে চোখের জলের লিপিড স্তর বৃদ্ধি করে, যা চোখের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক।
  • ১০০ ভাগ ইউভি সুরক্ষিত সানগ্লাস ব্যবহার করুন। রোদ থেকে ছড়ানো এই অতি বেগুনি রশ্মি সময়ের সঙ্গে অন্ধত্বের কারণ হয়েও দাড়াতে পারে।
  • চোখের সংক্রমণ এবং চোখের ফ্লু প্রতিরোধ করতে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করুন। অপরিষ্কার হাতে চোখ ধরবেন না। পাশাপাশি চোখের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
  • দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করান।
  • চোখের মেকআপ ও প্রসাধনী বন্ধুদের এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগ করবেন না। কারণ, এতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
  • মাঝে মাঝে আপনার চোখগুলিকে একটু বিশ্রাম দিন। যদি টানা কাজ করার সময় চোখের লেন্সগুলি জ্বালা সৃষ্টি করে, তবে কিছুদিন বিরতি নিন এবং নিয়মিত চশমা ব্যবহার করুন।

যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এমনও হতে পারে যে আপনার অবস্থার উন্নতির জন্য মেডিকেল হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

 টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ