আগামী ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ হতে যাচ্ছে। রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘ঢাকা লকডাউন’ ‘ঢাকা ব্লকেডসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা। জনমনে ভয়ভীতি ছড়াতে ছোট ছোট ঝটিকা মিছিল শুরু করেছে সারা দেশে।
রবিবার (৯ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের একাধিক স্থানে ঝটিকা মিছিল হয়েছে। মিছিলের পুলিশের অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় একজন উপ-পরিদর্শক বহিষ্কার হয়েছেন। নগর পুলিশ সতর্ক এবং কঠোর অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে রবিবার বিকেলে সিএমপি কমিশনার ও অতিরিক্ত আইজিপি হাসিব আজিজ দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ। তাদের কোনো কর্ম কিংবা অপর্কমের তৎপরতা চালাতে দেয়া হবে না। আমরা সতর্ক আছি, কঠোর অবস্থানে আছি।
রবিবার মিছিল চলাকালে দায়িত্বরত এক উপ-পরিদর্শককে আমরা চাকুরিচ্যুত করেছি। গাফলতি পেলেই ব্যবস্থা। নিষিদ্ধ কারো কর্মতৎপরতার সুযোগ আমরা দেবো না।’ রবিবার ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর, দেওয়ানহাট এলাকায় মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ।
তবে ষোলশহর মিছিলে অংশ নেওয়া তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকায় মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরে ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়া সৈকত চন্দ্র ভৌমিক, রাজন দাশ ও আনোয়ারুল হক ইশানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় মিছিল করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদল নেতা শহীদ ওয়াসিমসহ অন্যান্যদের হত্যায় সরাসরি জড়িতে বলে অভিযোগ রয়েছে তারা ফেসবুকে উষ্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। ১৩ নভেম্বরকে ঘিরে তারা ফেসবুকে সরব রয়েছেন। ৮ থেকে ১০ জনের একটি ঝটিকা মিছিলের কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছেন এক নেতা। সেই মিছিলের ব্যানারে ১৩ নভেম্বর ঢাকা ব্লকেড কর্মসূচির কথা রয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম মহানগর পর্যায়ের এক নেত্রীকে ১৩ নভেম্বর নিয়ে ফেসবুক মেসেঞ্জারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। যারা বিদেশে পলাতক তারা লাফাচ্ছে। এতে এলাকায় অবস্থান করা নিরীহি সমর্থকরা বেকায়দায় আছে। পুলিশের তল্লাশি ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের রোষানলে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে।’
ঝটিকা মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী ভোরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সামনে মিছিল করে। এই সময় হাতেনাতে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।’
নগরে ঝটিকা মিছিল নিয়ে সিএমপি এক অতিরিক্ত কমিশনার জানান, মিছিলগুলো হয় কয়েক সেকেন্ডের জন্য। বিভিন্ন যানবাহনে তারা আসে। গাড়ি এক পাশে রেখে ব্যানার নিয়ে কয়েক কদম মিছিল করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এক প্রকার শ্যূটিংয়ের মতো। সেই মিছিলের ভিডিও আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড হয় দেশের বাইর থেকে।
দেশের বাইর থেকে আবার ফেসবুকে উষ্কানিও দেয়া হয়, দেয়া হয় হুমকি। এখন আমাদের পক্ষে তো দেশের বাইর থেকে ধরে আনা সম্ভব নয়। আমাদের সীমানায় থেকে কিছু করলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি। লম্পঝম্ফ যাই করুক। রাস্তায় নামার সুযোগ আপাতত নেই।
এসএস/টিকে