আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী নিযুক্তসহ ২ দফা দাবি না মানলে কলম বিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলামের সই করা বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসভবনে দুর্বৃত্তের নৃশংস ছুরিকাঘাতে তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৮) নিহত এবং স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতর আহত হয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশন এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের শিকার তাওসিফ রহমান সুমনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। প্রকাশ্য দিবালোকে বিচারক পরিবারে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুরো বিচার বিভাগ আজ স্তম্ভিত ও বাকরুদ্ধ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারা দেশের বিচারকরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।
দেশের প্রত্যেক আদালত/ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন ও গাড়িতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বারবার পত্র পাঠানোর পরও সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিচার বিভাগের সদস্যরা রাষ্ট্রের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও তারা ও তাদের পরিবার অরক্ষিত ও নিরাপত্তাহীন।
অ্যাসোসিয়েশন বলছে, জেলা পর্যায়ের সব বিচারকের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থা নেই। চৌকি আদালতে কর্মরত বিচারকদের অবস্থা আরো শোচনীয়।
ফলে বিচারকদের বাধ্য হয়ে অরক্ষিত বাসায় ভাড়া থাকতে হয়, রিকশা ও ভ্যানে করে এমনকি পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করতে হয়, এই দৃশ্য দেখার যেন কেউ নেই। বিচার বিভাগের প্রতি এই উদাসীনতা ও চরম গাফিলতির বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা সোচ্চার থাকলেও রাষ্ট্র কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, যার পরিণতিতে আজ বিচারক পরিবারে এ করুণ বিপর্যয় নেমে আসে। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় বিচারকরা সর্বদা নিয়োজিত থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এই রক্তের দায় কোনোভাবে এড়ানোর সুযোগ নেই।
টিকে/