ট্রাম্পের অব্যাহত চাপের মধ্যেই, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় এলপিজি চুক্তি করল ভারত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি চুক্তি সই করেছে ভারত। এই চুক্তির আওতায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার এই দেশটিতে ব্যবহৃত মোট তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) প্রায় ১০ শতাংশই সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

জ্বালানির উৎস আরও বৈচিত্র্যময় করতেই ভারত এই উদ্যোগ নিয়েছে বলা হলেও বাস্তবে রুশ তেল কেনা নিয়ে ট্রাম্পের অব্যাহত চাপের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় এই এলপিজি চুক্তি করল নয়াদিল্লি।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

এর আগে গত আগস্টে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তলানিতে নেমে যায়। সেসময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেন। ওয়াশিংটনের অভিযোগ ছিল, রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে তেল কিনে মস্কোকে যুদ্ধ চালাতে সহযোগিতা করছে ভারত।

পরে ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে রুশ তেল আমদানি কমাতে রাজি হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনও নিশ্চয়তা দেয়নি নয়াদিল্লি।

এছাড়া কৃষিপণ্য বাণিজ্য থেকে শুরু করে রুশ তেল কেনা বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দুই দেশ এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।


ভারতের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসমন্ত্রী হার্দীপ সিং পুরি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে বছরে ২২ লাখ টন এলপিজি আমদানির জন্য এক বছরের চুক্তি করেছে ভারত। যা দেশের মোট এলপিজি আমদানির প্রায় ১০ শতাংশ।

পুরির ভাষায়, এটি “ভারতীয় বাজারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রথম এলপিজি চুক্তি”। তিনি বলেন, জনগণের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী এলপিজি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ভারত বিভিন্ন উৎস থেকে জ্বালানি সংগ্রহের পথ খুলছে। এতে “বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অন্যতম বৃহৎ এলপিজি বাজার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত হলো।”

এর আগে গত অক্টোবরে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট রিফাইনার এইচপিসিএল-মিত্তাল এনার্জি জানায়, ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা রুশ তেল কেনা বন্ধ করেছে। রাশিয়ার বৃহত্তম দুই তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে তারা তেল কেনা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।

এছাড়া ব্যক্তিখাতের সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব তারা পর্যালোচনা করছে।

এএফপি বলছে, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতের অর্থনীতি গত জুন প্রান্তিকে পাঁচ ত্রৈমাসিকের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বেড়েছে। সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও ভোক্তাদের আস্থার উন্নতিতে এই প্রবৃদ্ধি এসেছিল।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক এখনও ভারতের অর্থনীতির জন্য বড় চাপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত শুল্ক কমানো না হলে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬০ থেকে ৮০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

আরপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সংঘর্ষ, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড Nov 17, 2025
img
এ রায় দেশের মানুষের ঐতিহাসিক বিজয় : শারমিন Nov 17, 2025
img
মৃত্যুদণ্ডই শেখ হাসিনার উপযুক্ত বিচার: আখতার Nov 17, 2025
img
আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকার রয়েছে : নুরুল হক নুর Nov 17, 2025
img
মামুনের রায়ে আমরা সন্তষ্ট না, প্রয়োজনে আপিল করবো : শহীদ মুগ্ধের বাবা Nov 17, 2025
img

আইজিপির রায়ে অসন্তুষ্ট

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডে জুলাই প্রজন্মের বিজয় হয়েছে : ডাকসু ভিপি Nov 17, 2025
img
বহু বিতর্কের পর নীরবতা ভাঙলেন আফতাব শিবদাসানি Nov 17, 2025
img
চুক্তি অনুসারে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া ভারতের দায়িত্ব : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় Nov 17, 2025
img
২১ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসে যান চলাচল সীমিত Nov 17, 2025
img
বাংলাদেশে রিকশা চালালেন, ফুচকা খেলেন আহাদ রাজা মীর Nov 17, 2025
img
সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হবে Nov 17, 2025
কুমিল্লায় বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হকের গণমিছিল Nov 17, 2025
শেখ হাসিনার রায়: কী বললেন শহীদ শ্রাবণ গাজীর পরিবার? Nov 17, 2025
img
‘মিস ইন্টারন্যাশনাল’-এ নিজের জন্য ভোট চাইলেন জেসিয়া Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনা ও কামালের ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড ঐতিহাসিক রায়: অন্তর্বর্তী সরকার Nov 17, 2025
img
হাসিনার রায় শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের বিজয়ের ঐতিহাসিক রায়: এবি পার্টি Nov 17, 2025
img
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় অতীতের প্রতিশোধ নয় : তাজুল ইসলাম Nov 17, 2025
img
দুই দিনেই ঝড় তুলল অজয়-রাকুল এর জুটি Nov 17, 2025
img
নিরাপত্তা শঙ্কায় নতুন পদক্ষেপ নিলেন দিশা পাটানির বাবা Nov 17, 2025
img
বিচার স্বচ্ছ হয়েছে, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: মিয়া গোলাম পরওয়ার Nov 17, 2025