২২ বছর পর ভারতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুই দশক পর বাংলাদেশের ভারত বধের নায়ক শেখ মোরসালিন। তার একমাত্র গোলই বাংলাদেশ বহুল কাঙ্ক্ষিত জয় পেয়েছে।
গোলের খেলা ফুটবলে গোলদাতারাই নায়ক হন। তাই স্বাভাবিকভাবেই মোরসালিনকে নিয়েই সর্বত্র আলোচনা। কিন্তু তিনি এই গোলে শতভাগ অবদান দিলেন তাকে বল বাড়িয়ে দেওয়া আরেক ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেনকে, ‘আসলে আমি তো শুধু পা ছুঁয়েছি, এই গোলের শতভাগ অবদানই রাকিব ভাইয়ের। অসাধারণ বল দিয়েছিলেন তিনি, এখানে আমার চেয়ে তার কৃতিত্বই বেশি।’
২০২৩ সালে অভিষেক হওয়া মোরসালিন বাংলাদেশের জার্সিতে সাত গোল করেছেন। এর মধ্যে এই গোলটিকে এগিয়ে রাখছেন তিনি, ‘সৌন্দর্য্যের দিক থেকে হয়তো বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কিংস অ্যারেনার গোলটি এগিয়ে থাকবে কিন্তু ম্যাচের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনায় অবশ্যই এটি এখন পর্যন্ত আমার ক্যারিয়ারের সেরা গোল।’
মোরসালিন মাঝে ইনজুরিতে পড়েছিলেন। এজন্য ১৩ নভেম্বর নেপালের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারেননি। মাঝে শঙ্কা জেগেছিল ক্যাম্পও ছাড়তে পারেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ১৮ নভেম্বর তার গোলে জিতল বাংলাদেশ। এনিয়ে তাই ভিন্ন অনুভূতি, ‘আসলে মাংসপেশীতে টান ছিল যে কারণে মাঝে কয়েক দিন একটু সমস্যা ছিল। কোচ আশা দিয়েছিলেন ফিট হতে পারলে খেলতে পারব। এই বিশ্বাস আমারও ছিল। কিন্তু একাদশেই খেলব এবং গোল করব সেটা আসলে ভাবিনি।’
বাংলাদেশ-ভারতের শেষ জয় মানেই ছিল মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোল। সেই গোল্ডেন গোলের সাফল্য পেছনে ফেলেছেন মোরসালিন। তাই খানিকটা মিশ্র অনুভূতি, ‘আসলে মুন্না ভাইয়ের সেই গোলের গল্প শুনেই আমরা ফুটবলে রোমাঞ্চিত হয়েছি। তার সেই গোলের আবেদন ও গুরুত্ব কখনো কমবে না। এখন ভারত ম্যাচের জয়ে আমার নাম থাকবে, সেটা ভালো লাগার। তবে চাই এটা আমি বা অন্য কেউ আবার করুক, যেন ২২ বছরের অপেক্ষা আর না হয়।’
জাতীয় দলের জার্সিতে মোরসালিনের গোল সাতটি। ফরোয়ার্ড রাকিবই সেই সাত গোলের অর্ধেক যোগানদাতা। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরে। ওই ম্যাচে কার্ড জটিলতায় খেলতে পারবেন না রাকিব। তাই মোরসালিন খানিকটা ব্যথিত, ‘রাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার বোঝাপড়া দারুণ। রাকিব ভাই না থাকাটা অবশ্যই কষ্টকর। এরপরও মানিয়ে নিতে হবে। এটাই ফুটবলারদের দায়িত্ব।’
ওই ম্যাচের আগে জাতীয় দলে খেলা নেই। এখন পুরো মনোযোগ ক্লাব ফুটবলে। বসুন্ধরা কিংসে কয়েক মৌসুম খেলে আবাহনীতে এসেছেন। ফেডারেশন কাপে দুটি গোল করেছেন। জাতীয় দলের এই ফর্ম ক্লাবেও বজায় রাখতে চান মোরসালিন, ‘আশা ও দায়িত্ব নিয়ে আবাহনীতে এসেছি। গোল করে এবং করিয়ে ক্লাবের আস্থা প্রতিদান দিতে চাই।’
মোরসালিন বাংলাদেশের ফুটবলে সম্ভাবনাময় এক নাম। প্রতিভাবান এই ফুটবলার ক্লাবের হয়ে মালদ্বীপ থেকে ফেরার পথে মদকান্ড এবং পরবর্তীতে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় আসামীও হয়েছিলেন। এসব বিতর্ক ও সমস্যা পেছনে ফেলে খেলায় মনোযোগ ফিরিয়েছেন।
এবি/টিকে