৪৪৩ দিন কাছে নেই ভাই, আতঙ্কে প্রতি মুহূর্ত কাটানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার সেলিনার জেটলির

৪৪৩ দিনের অপেক্ষা যে কতটা দীর্ঘ, অসহ্য আর দমবন্ধ করা হতে পারে তা নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়েই বুঝিয়ে দিলেন অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি। প্রিয় ভাই বিক্রান্ত কুমার জেটলির কাছ থেকে এতদিন বিচ্ছিন্ন থাকা তাকে যেন এক অনিঃশেষ অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।

আরব আমিরশাহীতে ভাইয়ের গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে প্রতি দিন, প্রতি ঘণ্টা, প্রতি মিনিট যেন সেলিনার কাছে এক অশেষ উদ্বেগের গণনা। সেই যন্ত্রণাই তিনি উজাড় করে দিলেন নিজের সামাজিক মাধ্যমে, আর সেই আবেগে চোখ ভিজল নেটিজেনদেরও।



ইনস্টাগ্রামে ভাইয়ের বন্দিদশার প্রতিটা দিন গুনে গুনে তাঁর মনকথা তুলে ধরেন তিনি। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে শুরু করে হঠাৎ বন্দি হওয়ার ঘটনা সবই যেন এখনও তাঁর মনে তাজা। তিনি লিখেছেন, যেদিন থেকে জানতে পারেন ভাইকে আটক করা হয়েছে, সেদিন থেকেই তার জীবন ভয় আর নীরবতায় বন্দি। প্রতিবার ফোনে ভাইয়ের কণ্ঠ শোনার অপেক্ষা তাকে আরও দুর্বল করে দেয়। শেষবার কথোপকথনের স্মৃতিতে তিনি শিউরে ওঠেন, কারণ ভাই তখন অসুস্থ ছিল। সেলিনার ভয় আটকের পর তার অবস্থাই বা কেমন!

দীর্ঘ ৪৪৩ দিনের এই উদ্বেগ আর নীরবতা শুধু একজন বোনের নয়, একজন নাগরিকের প্রতি সিস্টেমের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। পরিবারের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছায় না, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আপডেট মেলে না এই অভিযোগ নিয়েই সেলিনা দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালতও তার আবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে বিদেশ মন্ত্রককে কড়া নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি পরিবার ও আমিরশাহীর মধ্যে যোগাযোগের জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। তবুও এখনো একই অন্ধকারে সেলিনার ভাই, আর তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।

তার পোস্ট ছড়িয়ে পড়তেই সোশাল মিডিয়ায় শুরু হয় সহমর্মিতার ঢেউ। অনেকেই বলছেন, এতটা অসহায় কণ্ঠস্বর আগে খুব কমই দেখা গেছে। একজন বোনের আকুতি, এক পরিবারের প্রার্থনা সব মিলিয়ে এই পোস্ট যেন কঠোর হৃদয়ের মানুষকেও নরম করে দেয়।

অভিনয়ের বাইরে সমাজে নিজের অবস্থান ও নৈতিক দায়িত্ববোধ নিয়ে আগেও বারবার সরব হয়েছেন সেলিনা। এবার ভাইয়ের মুক্তির দাবিতে যে দৃঢ় লড়াই তিনি শুরু করেছেন, তা মনে করিয়ে দেয় তার আলো শুধু পর্দায় নয়, বাস্তবেও সমানভাবে ঝলমল করে।

আরপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
হবিগঞ্জে দুদকের গণশুনানি আজ Nov 24, 2025
img
কষ্টই মানুষকে শক্ত করে: অক্ষয় কুমার Nov 24, 2025
img
এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি: নাহিদ ইসলাম Nov 24, 2025
img
তিশার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ভারতীয় প্রযোজকের Nov 24, 2025
img
৪৪৩ দিন কাছে নেই ভাই, আতঙ্কে প্রতি মুহূর্ত কাটানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার সেলিনার জেটলির Nov 24, 2025
img
রিয়েলিটি শোর মতো জীবনেও প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণের বার্তা অরিজিতের Nov 24, 2025
img
২৪ নভেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে কী ঘটেছিল? Nov 24, 2025
img
রাতে প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি ম্যানইউ ও এভারটন Nov 24, 2025
img
আজ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে ঢাকার আকাশ Nov 24, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর দিল্লি, ২য় অবস্থানে রাজধানী ঢাকা Nov 24, 2025
img
সোশ্যাল মিডিয়ায় হেনস্তায় সমান শাস্তির দাবি হুমা কুরেশির Nov 24, 2025
img
জেনে নিন আজ দেশে কত দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ Nov 24, 2025
img
ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৬৯ রানে হারিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান Nov 24, 2025
img
নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রেখেছেন তারেক রহমান: নিপুণ রায় Nov 24, 2025
img
ভারতীয় সিনেমার নিবেদিত প্রেমিকদের সেই যুগ Nov 24, 2025
img
কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠক Nov 24, 2025
img
এলচের সঙ্গে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ল রিয়াল মাদ্রিদ Nov 24, 2025
img
মিলান ডার্বিতে ১-০ গোলে জিতে টেবিলের দুইয়ে উঠল এসি মিলান Nov 24, 2025
img
রোনালদোর দুর্দান্ত গোল, আল খালিজকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিল আল নাসর Nov 24, 2025
img
আবারও সাংবাদিকতায় ফেরার ইচ্ছা হাসান মাসুদের Nov 24, 2025