পার্থ টেস্টে ইংল্যান্ডের লজ্জাজনক হারের পর ইংলিশদের খোঁচা দেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি অজি কিংবদন্তি মার্ভ হিউজ। মাত্র দুই দিনে থ্রি লায়ন্সের হারের পর তাদের বোলিং আক্রমণ সম্পর্কে একটি বিস্ময়কর তথ্য তুলে ধরেছেন ফ্রুটফ্লাই নামে খ্যাত অস্ট্রেলিয়ার এই সাবেক ফাস্ট বোলার। এক ইংলিশ ভক্তের সঙ্গে বাকযুদ্ধে তিনি স্মরণ করুইয়ে দিয়েছেন, দুই ইনিংস মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার যে ১২ উইকেটের পতন হয়েছে তার সবকটিই নিয়েছেন এমন বোলাররা, যারা ইংল্যান্ডে জন্মাননি।
হিউজ এই তথ্যটি প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক ভক্তের জবাবে। সেই ভক্ত স্টিভ স্মিথকে উপহাস করছিলেন ২০১৮ সালের স্যান্ডপেপার বল-ট্যাম্পারিং কাণ্ডে তার ভূমিকার জন্য শাস্তি পাওয়ার পর প্রেস কনফারেন্সে কাঁদার প্রসঙ্গ তুলে।
প্রথম ইনিংসে বেন স্টোকস (নিউজিল্যান্ডে জন্ম) পাঁচ উইকেট নেন, ব্রাইডন কার্স (দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম) পুরো ইয়াচে পান পাঁচ উইকেট, আর জোফরা আর্চার (বার্বাডোজে জন্ম) নেন দুই উইকেট। অন্যদিকে ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া দুই পেসার গাস অ্যাটকিনসন ও মার্ক উড ছিলেন উইকেটশূন্য।
হিউজ ভক্তটিকে আরও মনে করিয়ে দেন যে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্টে প্রতিপক্ষের ২০টি উইকেটই নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া বোলাররা।
তিনি এক্সে একটা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ’এইটা সামলাও ক্রেইগ… এবার হয়তো নিজেই কেঁদে ফেলবে!!!’
হিউজ সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে সরব সাবেক ক্রিকেটারদের একজন এবং বছরের পর বছর ধরে তিনি ভক্ত ও বিশ্লেষকদের সঙ্গে তীব্র তর্কে জড়িয়েছেন। ইংলিশ টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানের সঙ্গে তার চলমান দ্বন্দ্বটি সবচেয়ে নজরকাড়া। ২০২৩ সালে লর্ডসে জনি বেয়ারস্টোর বিতর্কিত স্টাম্পিং নিয়ে মরগানের প্রতিক্রিয়ার জবাবে হিউজ তাকে ‘ভণ্ড ফ্লগ’ এবং ‘মূর্খ’ বলে আখ্যা দেন।
এরপর মরগানের প্রোডাকশন টিম হিউজকে পিয়ার্স মরগান আনসেন্সরড অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়, যা তিনি দ্রুতই প্রত্যাখ্যান করেন।
খেলোয়াড়ি জীবনে হিউজ প্রতিপক্ষদের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়ানোর কারণে বেশ আলোচিত ছিলেন। জাভেদ মিয়াঁদাদের সঙ্গে তার সে সময়ের দ্বন্দ্বটি বিশেষভাবে স্মরণীয়—যেখানে পাকিস্তানি কিংবদন্তি তাকে ‘মোটা বাস কন্ডাক্টর’ বলেছিলেন, আর হিউজ উইকেট নেওয়ার পর জবাব দিয়েছিলেন, ‘টিকিট, প্লিজ!’
গোঁফের কারণে বিখ্যাত এই ফাস্ট বোলার একবার তার বল খেলতে সমস্যায় পড়লে ইংল্যান্ড অধিনায়ক গ্রাহাম গুচকে বলেছিলেন, ’চাইলে তোমার দিকে একটা পিয়ানো ছুড়ে মারি, দেখি সেটা বাজাতে পারো কি না?’
খেলোয়াড়ি দক্ষতা ও দারুণ ব্যক্তিত্বের জন্য এই ফাস্ট বোলার অস্ট্রেলিয়ায় এখনও খেলাধুলাপ্রেমীদের অন্যতম প্রিয় ব্যক্তি। তার আলাদা চেহারা, আগ্রাসী মাঠের আচরণ ও বোলিংয়ের আগে শরীর স্ট্রেচ করার মজার ভঙ্গিমার জন্য তিনি ছিলেন দর্শকদের প্রিয়। ভিক্টোরিয়ান এই পেসার ক্যারিয়ারে ৫২ টেস্টে ২১২ উইকেট নিয়েছিলেন। ১৯৮৫-৮৬ ভারত সিরিজে তার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। এই উইকেটগুলোর মধ্যে কমপক্ষে ৭৫টি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। হিউজ তার ন’বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে একটি হাফ-সেঞ্চুরিও করেছিলেন।
এবি/টিকে