ভেনিজুয়েলার সরকার সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিকল্পনাকে ‘হাস্যকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ‘অস্তিত্বহীন’ কার্টেল দে লস সোলে্সকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মারকো রুবিও এ মাসের শুরুর দিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনি মাদক সরবরাহের অভিযোগে কার্টেল দে লস সোলে্সকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করবে।
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করে, এই কার্টেলটি উচ্চপদস্থ ভেনিজুয়েলান কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত এবং তারা ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে এর নেতৃত্বে থাকার অভিযোগও করেছে—যা মাদুরো অস্বীকার করেন।
এ পদক্ষেপ এমন সময় আসছে যখন কারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সামরিক উপস্থিতির কারণে মাদুরো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে আছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এই ঘোষণাকে সামরিক পদক্ষেপের যৌক্তিকতা হিসেবে ব্যবহার করতে পারে কিনা তা নিয়ে কিছু উদ্বেগও দেখা দিয়েছে, যদিও নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংশ্লিষ্ট আইন এমন অনুমতি দেয় না।
মাদুরো ও তার সরকার সব সময় অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র কেবল ভেনিজুয়েলার বিপুল তেল সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্যই ‘রেজিম-চেঞ্জ’ চায়।
ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের সচিব মারকো রুবিওর নতুন ও হাস্যকর মনগড়া দাবিকে ভেনিজুয়েলা দৃঢ়ভাবে, পুরোমাত্রায় এবং নিঃশর্তভাবে প্রত্যাখ্যান করে—যেখানে তিনি অস্তিত্বহীন কার্টেল দে লস সোলে্সকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিরাচরিত রেজিম-চেঞ্জ নকশায় ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে অবৈধ ও বেআইনি হস্তক্ষেপকে ন্যায়সংগত করার জন্য এক নোংরা ও জঘন্য মিথ্যার পুনরুজ্জীবন।’ তিনি দাবি করেন, ‘এই নতুন চাল আগের সকল আগ্রাসনের মতোই ব্যর্থ হবে।’
রয়টার্স শনিবার জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলাসম্পর্কিত অভিযানের নতুন ধাপ শুরু করতে যাচ্ছে—যদিও সেই পদক্ষেপের সুনির্দিষ্ট সময় বা পরিধি নিশ্চিত করা যায়নি, কিংবা ট্রাম্প চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন কি না তাও জানা যায়নি।
গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় কার্টেল দে লস সোলে্সকে ‘বিশেষভাবে নামকরা বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে—যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের যেকোনো সম্পদ জব্দ করা হয় এবং মার্কিন নাগরিকদের জন্য তাদের সঙ্গে লেনদেন নিষিদ্ধ হয়।
সংগঠিত অপরাধ নিয়ে গবেষণা-নির্ভর প্রতিষ্ঠান ইনসাইট ক্রাইম আগস্টে জানায়, মাদুরোকে কার্টেলের প্রধান বলা একটি ‘অতিরঞ্জন’। তাদের মতে, এটি বরং এমন এক ‘দুর্নীতির কাঠামো’, যেখানে সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তারা মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে কাজ করে লাভবান হন।
এবি/টিকে