ইউটিউবে নিজের পছন্দের ভিডিও খুঁজে পেতে অনেক ব্যবহারকারীকেই প্রায়ই হিমশিম খেতে হয়। অ্যালগরিদম-নির্ভর রেকমেন্ডেশন বেশি সময়েই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আর তার ফলেই হোম ফিড ভরে ওঠে অনাকাঙ্ক্ষিত কনটেন্টে। এই দীর্ঘদিনের অভিযোগ এবার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে ইউটিউব। শুরু করেছে নতুন একটি পরীক্ষামূলক ফিচার ‘ইউর কাস্টম ফিড’।
এই ফিচার ব্যবহারকারীদের নিজেদের ফিড নিজেদের মতো করে সাজানোর সুযোগ দেবে। ইউটিউব বলছে, বহু ব্যবহারকারী জানিয়েছেন যে প্ল্যাটফর্ম মাঝে মাঝে তাদের দেখার ধরন ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে। যেমন- কয়েকটি শিশুতোষ বা ডিজনি ঘরানার ভিডিও দেখলেই ধরে নেওয়া হয় ব্যবহারকারী নিয়মিত এই ধরনের কনটেন্ট দেখতে চান। এরপর পুরো হোম ফিড সেই ভিডিওতে ভরে যায়। যা অনেক সময়ই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
নতুন ‘কাস্টম ফিড’ এই সমস্যারই সমাধান দিতে পারে। যাদের জন্য ফিচারটি চালু করা হয়েছে তারা হোমপেজে ‘হোম’ বাটনের পাশেই একটি নতুন অপশন দেখতে পাবেন “Your Custom Feed”। সেখানে ক্লিক করলেই ব্যবহারকারীর সামনে আসবে একটি বক্স। যেখানে তারা নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী নির্দিষ্ট নির্দেশ বা ‘প্রম্পট’ দিতে পারবেন। যেমন- রান্না, ভ্রমণ, প্রযুক্তি বা বই নিয়ে ভিডিও দেখতে চাইলে সরাসরি সেই বিষয়ের নাম টাইপ করলেই হবে। এরপর ইউটিউব সেই আগ্রহকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভবিষ্যতের ফিড সাজিয়ে দেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ফিচার জনপ্রিয় হলে ইউটিউব ব্যবহার করার অভিজ্ঞতায় বড় পরিবর্তন আসতে পারে। এত দিন অনাকাঙ্ক্ষিত ভিডিও এড়াতে ব্যবহারকারীদের আলাদাভাবে “আগ্রহ নেই” বা “চ্যানেল সুপারিশ করবে না” -এ রকম অপশন ব্যবহার করতে হতো। নতুন ফিচারের মাধ্যমে একই কাজ আরও সহজ এবং সরাসরি করা সম্ভব হবে।
ইউটিউবের এই উদ্যোগের পাশাপাশি অন্যান্য প্ল্যাটফর্মও পারসোনাল ফিডের দিকে ঝুঁকছে। মেটার থ্রেডস সম্প্রতি অ্যালগরিদম নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষামূলক ফিচার চালাচ্ছে। আর এক্স (আগের টুইটার) কাজ করছে এমন এক ব্যবস্থায়। যেখানে ব্যবহারকারী তাদের এআই চ্যাটবট ‘গ্রোক’-কে ট্যাগ করলেই ফিড বদলে যাবে।
বর্তমানে ‘ইউর কাস্টম ফিড’ সীমিত সংখ্যক ব্যবহারকারীর জন্য চালু করা হয়েছে। পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল মিললে এটি সব ব্যবহারকারীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউটিউবের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ব্যবহারকারীদের সুবিধা বাড়াতে এবং অ্যালগরিদমের সমালোচনা কাটাতে এই ফিচার বড় ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরপি/এসএন