মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচিকে চীনের সাথে বিরোধ আর না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এই সপ্তাহে টেলিফোনে আলোচনার সময় এ আহ্বান জানান ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্রগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
তাকাইচির এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেইজিংয়ের সাথে বছরের পর বছর ধরে চলা সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক বিরোধ শুরু হয়। যখন তাকাইচি নভেম্বরে সংসদে ঘোষণা করেন যে, তাইওয়ানের উপর একটি সম্ভাব্য চীনা আক্রমণ হলে জাপান সেখানে সামরিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
তার এই মন্তব্যের পর বেইজিং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। চীনা নাগরিকদের জাপানে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে।
জবাবে জাপানও চীনে তাদের নারিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যা পরে দুই দেশের বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কেও প্রভাবিত করে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) তাকাইচির সাথে টেলিফোনে কথা বলার সময়, ট্রাম্প বলেন, তিনি আর কোনো উত্তেজনা দেখতে চান না, কারণ বিষয়টি সংবেদনশীল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপানের দুটি সরকারি সূত্র জানায়।
তবে ট্রাম্প জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচির কাছে কোনো নির্দিষ্ট দাবি করেননি। তিনি তাকাইচির মন্তব্য প্রত্যাহারের জন্য বেইজিংয়ের মতো কোনো আহ্বানও জানাননি।
অন্যদিকে, জাপান এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দেয়নি, বরং বলেছে যে এই মন্তব্য দীর্ঘস্থায়ী নীতির প্রতিফলন।
এদিকে, সরকারী সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে ট্রাম্পের কথা বলার পর তাকাইচির সাথে ট্রাম্পের টেলিফোনে কথা হয়। চীনা নেতা মার্কিন নেতাকে বলেছিলেন, তাইওয়ানের চীনের সাথে যোগ দেয়ার বিষয়টি তাদের ‘ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ অনুযায়ী কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে তাইওয়ানকে নিজেদের অঞ্চল বলে দাবি করে আসছে চীন। তবে, গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ান বেইজিংয়ের মালিকানার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এপ্রিলে বেইজিং ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্পের। তখনকার আলোচনায় তাইওয়ান নিয়ে কোনো কথা হবে কিনা তা নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি, বরং বলেছেন যে বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে এবং তারা একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার কাছাকাছি।
রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘চীনের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খুবই ভালো এবং এ বিষয়টি আমাদের প্রিয় এবং ঘনিষ্ঠ মিত্র জাপানের জন্যও খুবই ভালো।’
অন্যদিকে, জাপানের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বিগ্ন যে, ট্রাম্প চীনের সাথে একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন কমিয়ে দিতে পারেন। যা বেইজিংকে আরও উৎসাহিত করবে এবং পূর্ব এশিয়ায় সংঘাতের সূত্রপাত করতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স
ইএ/টিকে