টানা দুই সপ্তাহের উচ্চমূল্যের পর বিশ্ববাজারে অবশেষে স্বর্ণের দাম বড় ধরনের পতন দেখেছে। বিনিয়োগকারীরা লাভ তুলে নিতে শুরু করা এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে চাপ পড়ে। এতে বিশ্ববাজারে সোনার দর কমেছে প্রায় ০.৫ শতাংশ।
রয়টার্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম নেমে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৪,১৪৫.০৮ ডলার। ডিসেম্বর সরবরাহের যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটেও দাম কমেছে ০.৬ শতাংশ, যা এখন ৪,১৪০.৮০ ডলার।
গোল্ডসিলভার সেন্ট্রালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রায়ান ল্যান বলেন, বুধবার স্বর্ণের দাম বাড়ার পরই অনেক বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। পাশাপাশি ফেডের নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে সোনার বাজার এখন সমন্বয়ের পর্যায়ে আছে। সুদের হার কবে এবং কতটা কমানো হবে এ নিয়ে ফেডের ভিন্নমতের কারণে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে বিভিন্ন ডেরিভেটিভসের দিকে ঝুঁকছেন।
অন্যদিকে, নিউইয়র্ক ফেডের প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামস ও গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন দুর্বল শ্রমবাজারের কারণে ডিসেম্বরেই সুদের হার কমানো যেতে পারে। এই সিগন্যালের প্রভাব পড়েছে ট্রেজারি ইল্ডেও।
স্বর্ণের সঙ্গে আরও কয়েকটি মূল্যবান ধাতুর দামে পরিবর্তন এসেছে। রূপার দাম কমেছে ০.৯ শতাংশ (৫২.৮৯ ডলার), প্যালাডিয়ামের দামও ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১,৪০৯.৮৭ ডলার। তবে প্লাটিনামের দাম উল্টো বেড়েছে ১.৪ শতাংশ, এখন এর দাম ১,৬১১.০৪ ডলার।
দেশের বাজারে সর্বশেষ দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বর্তমানে বাজারে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ২,০৮,১৬৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের ভরি ১,৯৮,৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ভরি ১,৭০,৩১৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির ভরি ১,৪১,৬৪৮ টাকা।
বাজুস জানিয়েছে, সোনার মূল্যের সঙ্গে সরকারের ৫% ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ৬% মজুরি যুক্ত হবে। গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরি কিছুটা বাড়তে বা কমতে পারে।
চলতি বছর দেশে এখন পর্যন্ত ৮০ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে ৫৪ বার, কমানো হয়েছে ২৬ বার।
২০২৪ সালে মোট ৬২ বার দাম পরিবর্তন হয়েছিল—এর মধ্যে ৩৫ বার বাড়ানো এবং ২৭ বার কমানো হয়েছিল।
এমকে/এসএন