জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘সংস্কারের পাহারাদার’ হিসেবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগের পর ২৪ জনের দেশে ফিরে আসা উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আমিরাতে কারারুদ্ধ প্রবাসীদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ আখ্যা দিয়ে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা আরও আগে করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকারের উচিত ছিল আরও আগে প্রবাসী জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা। এই জুলাই যোদ্ধাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি দাবি জানান, এই মুক্তিপ্রাপ্তদের পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। পাশাপাশি, এনসিপির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পোস্টাল ভোটের মাধ্যমে প্রবাসীরাও দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জানানোর সুযোগ পাবেন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি গণ-অভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা একটি রাজনৈতিক দল। তিনি গণ-অভ্যুত্থান কুক্ষিগত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গণ-অভ্যুত্থান জনগণের এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ছাত্রনেতাদের এখানে অবদান রয়েছে।
তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের ফসল নেয়ার বেলায় সবাই এগিয়ে আসে। এই ফসল বিএনপি-জামায়াত সমানভাবে নিচ্ছে এবং আগামী নির্বাচনেও তারা সেই ধরনের একটা বন্দোবস্ত করছে। কিন্তু যখন প্রশ্ন আসে গণ-অভ্যুত্থানের দায়িত্ব নেয়ার, শহীদ পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার, আহত যোদ্ধাদের দায়িত্ব নেয়ার, তখনই বলা হয় এনসিপির কাছে যাও।’
তিনি স্পষ্ট করেন, দায়িত্ব নেয়ার বেলায় এনসিপি একা থাকলেও ফসল ভোগ করার ক্ষেত্রে তাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে অনুরোধ থাকবে: গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ যেদিকে যাওয়ার কথা ছিল, সেই রাস্তা যেন অবরুদ্ধ করা না হয়। নাহিদ ইসলাম দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে বলেন, যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, তা বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। তার দাবি: একটি দল প্রকাশ্যে সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, আরেকটি দল গোপনে।
আসন্ন গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের গণভোটে ফ্যাসিস্টদের অনুসারী ছাড়া কেউ ‘না’-এর পক্ষে থাকবে না, থাকা উচিতও না। কিন্তু একটি রাজনৈতিক শক্তি পুরোনো কাঠামোকেই ধরে রাখতে চাইছে, ফলে তারা ‘না’-এর পক্ষে ক্যাম্পেইন করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এনসিপি এবারের নির্বাচনে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাগুলো অর্জন করতে চায় জানিয়ে নাহিদ বলেন, তার দল এবারের নির্বাচনে ‘সংস্কারের পাহারাদার’ হিসেবে অংশগ্রহণ করবে।
ইউটি/এসএন