পিলখানায় হত্যাকাণ্ড
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুরু থেকেই জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। অথচ অভিযোগ ছিল পিলখানা ট্রাজেডির ঘটনার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন তিনি।
যদিও সোহেল তাজের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ঘটনার সময় তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। অথচ তার বিষয়ে ভিন্ন চিত্র উঠে এলো সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে। হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহ খানেক আগেই অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি সোহেল তাজ বিডিআর ইউনিফর্ম তৈরি করতে দেন।
পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ৮ নম্বর কয়েদি সাক্ষী হাবিলদার জসিম উদ্দিন খান ও দরজি আছিফুর রহমান আকাশের জবানবন্দিতে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
তদন্ত কমিশনকে হাবিলদার জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের জন্য বিডিআর ইউনিফর্ম তৈরি করা হয়।
বিডিআর সদর দপ্তরে কর্মরত দরজি আকাশ তার জবানবন্দিতে বলেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের জন্য ইউনিফর্ম বানাতে তার অফিসে গমন করেন এবং তার শরীরের মাপ নিয়ে আসেন। সোহেল তাজ এর ইউনিফর্ম বানানোর জন্য সদর রাইফেল ব্যাটালিয়ন এর মেজর মোস্তাক তাকে নির্দেশ দেন। ইউনিফর্মের জন্য মাপ নিতে ডিএডি তৌহিদ আকাশকে সোহেল তাজের অফিসে নিয়ে যান। সেখানে সোহেল তাজের শরীরের মাপ নিয়ে তার কিছুদিন পরেই তিনি ইউনিফর্ম তৈরি করে সোহেল তাজ এর অফিসে পৌঁছে দেন।
আকাশের ভাষ্যমতে -সোহেল তাজের জন্য বানানো ইউনিফর্মে কোনো র্যাংক লাগানো হয়নি, কিন্তু ডিপ সাইন ছিল। ইউনিফর্ম পৌঁছে দেওয়ার দিন আকাশের সাথে সোহেল তাজ এর দেখা হয়নি।
আকাশ আরো জানান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ প্যারেড দেখতে আসবেন বলে তার নিজের জন্য একটি ইউনিফর্ম বানাচ্ছেন, এ কথা অন্যান্য অফিসাররা জানতে পারলে তাদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয় এবং তারা অনেকেই ইউনিফর্মটি দেখেন।
প্রসঙ্গত, ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায়, তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানদের হামলায় নিহত হন ৫৭ সেনা কর্মকর্তা। এই নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ১১ মাস ধরে তদন্ত করে রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করে কমিশন।