জ্বালানির প্রবাহ অবাধ রাখার লক্ষ্যে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সব পক্ষের প্রতি জ্বালানি অবকাঠামোকে সংঘাতের বাইরে রাখার আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। কৃষ্ণসাগর উপকূলে কয়েকটি হামলার পর বৃহস্পতিবার তুরস্কের জ্বালানি মন্ত্রী আলপারস্লান বায়রাকতার এই আহ্বান জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে সমুদ্রপথে রাশিয়ার বন্দরগামী দু’টি খালি ট্যাংকারে হামলা চালায় ইউক্রেন। ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে মস্কোর হামলার জবাবে তেল ট্যাংকারে ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে কিয়েভ।
মঙ্গলবারের আরেক ঘটনায় সূর্যমুখী তেল বহনকারী রুশ-পতাকাবাহী একটি ট্যাংকার ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে অভিযোগ করেছে মস্কো। তবে ইউক্রেন ওই হামরায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বায়রাকতার বলেন, আশা করি এই ভয়াবহ যুদ্ধ শেষ হবে। কিন্তু আজকের অবস্থায়ও আমরা সব পক্ষ রাশিয়া ও ইউক্রেনকে জ্বালানি অবকাঠামোকে যুদ্ধের বাইরে রাখার আহ্বান জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের জ্বালানি প্রবাহ অব্যাহত রাখতে হবে। কাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়ামের (সিপিসি) মতো রুটগুলোকে নিরাপদ রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে।
• বেড়েছে ঝুঁকি
যুদ্ধ চলাকালীন কিয়েভ ও মস্কোর সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক। আঙ্কারা বলেছে, রুশ সংশ্লিষ্ট জাহাজে কোনও ধরনের হামলাই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে উভয় পক্ষকে সতর্ক করেছে এবং বুধবার ন্যাটোর বৈঠকেও বিষয়টি তুলে ধরেছে দেশটি।
চলমান এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে সমুদ্রপথে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পাশাপাশি কিয়েভের স্থাপনা ও জাহাজে হামলা বৃদ্ধি করতে রুশ বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এসব হামলায় কৃষ্ণসাগরে জাহাজে পণ্য পরিবহনের ব্যয় ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় রুশ পণ্য পরিবহনকারী তুরস্কের একটি কোম্পানি তাদের কাজ স্থগিত ঘোষণা করেছে। কোম্পানির একটি জাহাজ সেনেগাল উপকূলে হামলার স্বীকার হওয়ার পর ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জাহাজটিতে হামলার ঘটনায় কেউ দায় স্বীকার করেনি।
কাজাখস্তানের ৮০ শতাংশের বেশি রপ্তানির তেলবহনকারী এবং বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহের ১ শতাংশের বেশি পরিচালনাকারী সিপিসি পাইপলাইন শনিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। কৃষ্ণসাগরের নভোরোসিস্ক বন্দরসংলগ্ন টার্মিনালে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় সেখানকার একটি মুরিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কাজাখস্তান ডিসেম্বর থেকে আরও বেশি অপরিশোধিত তেল বাকু-তিবিলিসি-জেইহান (বিটিসি) পাইপলাইনের মাধ্যমে পাঠাবে বলে দেশটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বায়রাকতার বলেন, বিটিসির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত জ্বালানি সরবরাহ হ্রাস পায়নি। আজ পর্যন্ত বৈশ্বিক বাজারে প্রতিদিন ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ ব্যারেল তেল সরবরাহ করছে বিটিসি।
সূত্র: রয়টার্স, আনাদোলু।
আরপি/টিকে